বুরা না মানো হোলি হ্যায়...

মুম্বই মনতাজ-এ লিখছেন মিলন মুখোপাধ্যায়।হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলুম খানকয়েক দেখা ছবির কথা। বোতাম টিপে পরপর চার-পাঁচটি চ্যানেলে হরেক রকম ছবি। বিভিন্ন বিষয়। হাজারো চরিত্রের সমাবেশ। ওড়িশায় হিন্দু-অহিন্দুর কাজিয়া। জম্মু-কাশ্মীরে বকলমে হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা। বন্যায় ভাসমান অসহায় বিহারবাসীদের অচেনা মুখ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৫ ০১:০০
Share:

হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলুম খানকয়েক দেখা ছবির কথা। বোতাম টিপে পরপর চার-পাঁচটি চ্যানেলে হরেক রকম ছবি। বিভিন্ন বিষয়। হাজারো চরিত্রের সমাবেশ। ওড়িশায় হিন্দু-অহিন্দুর কাজিয়া। জম্মু-কাশ্মীরে বকলমে হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা। বন্যায় ভাসমান অসহায় বিহারবাসীদের অচেনা মুখ। ‘মহারাষ্ট্র নব নির্মাণ’ কোম্পানির সেনার ‘মিঁয়াও’ হুংকারে অ-মরাঠাদের কৌপিন খসার দশা।... এই সব রাজনৈতিক খেলাধুলোর মধ্যেও উত্‌সব-মোচ্ছব অন্তহীন। বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই আছে। গেল বারে মনে পড়ল, দোলের দিনে কেমন ‘বুরা না মানো-হোলি হ্যায়’ হয়েছিল অধমের কপালে। ঘটনাটা শোনাই...

Advertisement

ভাবছিলুম, নানা রকমারি থরহরি খেলায় মেতে কী নিদারুণ সাকার্সের কুশীলব হয়ে দিনযাপন করেছি আমরা। সঙ্গে সঙ্গে মনের তাজমহলে ভেসে উঠল বাল্যকালে শোনা সেই প্রবাদপ্রতিম যাত্রার সংলাপটি : সত্য সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দ্যাশ...

মনে মনে কেমন অসহায় হাসি পাচ্ছে। হাঁটছি নিজ আবাসের দিকে। সাতবাংলা থেকে লোখন্ডওয়ালা। পানাহারের নেমন্তন্ন সেরে সদর রাস্তায় পা রেখে ভাবলুম, অটোরিকশা বা ট্যাক্সি কিছু একটা ধরে ‘পরশপাথর’-এর তুলসী চক্কোত্তির কায়দায় হাওয়া খেতে খেতে ফিরব। ও মা! পাঁচ-দশ মিনিট করে প্রায় আধঘণ্টা। অটোফটো কেন, কোনও গাড়িঘোড়ার লক্ষণই নেই জে পি রোডের মতো সদাব্যস্ত রাস্তায়।

Advertisement

ধুত্তেরি বলে হাঁটা ধরলুম। নিতান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বে। কারণ হাঁটলে কয়েক পাত্রের আমেজ বা ঘোর কমে যায়। তবু, নান্য পন্থা বিদ্যতে। কতক্ষণই বা লাগবে! ‘মডেল টাউন’ ঘেঁষা শর্টকাট ধরে গেলে বড়জোর মিনিট কুড়ি-পঁচিশ।

স্থান : মুম্বই শহরতলির এবড়োখেবড়ো পথ। কাল : মধ্যরাত। পাত্রপাত্রী : বর্তমান লেখক ও শ্মশানের নৈশঃব্দ। সহসা কেমন যেন মনে হল, এ নাটকে আরও কিছু কুশীলব নেপথ্যে, উইংসের আড়ালে, আশেপাশে রয়েছেন। চোর? গুন্ডা? না, ছিনতাইকারী? দ্রুত পায়ে হাঁটছি। ডান পাশের দেওয়ালের শেষে কেউ ছিল নাকি! হয়তো মনের ভুল! মনে হল, ওদিকে তাকাতেই যেন সরে গেল। ডান ধারে অন্ধকার ঝোপের আড়ালে কেউ যেন মিলিয়ে গেল সড়াত্‌ করে। না, না। ধ্যাত! কেউ নেই।

মনের জোর বাড়াতে হাঁটার গতি আরও বাড়িয়ে দিলুম। নেশা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। ভাবলুম গান গাইলে কেমন হয়? দু’পাশে দালান, বাড়ি, দেওয়াল। কয়েকটা গাছটাছ, বাগান। দূরে দূরে কর্পোরেশনের নিস্তেজ আলোয় জমাট-বাঁধা থমথমে অন্ধকার ঘাপটি মেরে আছে। আড়চোখে দেখতে দেখতে হাঁটছি ঊর্ধ্বশ্বাসে। গান গাইব কী! ঢোঁক গিলতে গিয়ে টের পেলুম গলা শুকিয়ে কাঠ। ঠিক তক্ষুনি আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাজ করল।

টের পেলুম কে বা কারা হেঁটে আসছে ঠিক আমার পেছন পেছন। ফিরে তাকাবার সাহস নেই। প্রাণপণ দৌড় দেব? অশরীরী হলে কি আর পাল্লা দিয়ে পারব? এ পথ ফুরোবার আগেই হয়তো ফুরিয়ে যাব নিজেই। আদৌ কেউ অনুসরণ করছে কি না আন্দাজ পেতে ঘাড় বেঁকিয়ে, আড় নয়নে তাকালুম। ও হরি! এ তো প্রথম পাণ্ডবের শেষ সঙ্গী বা ভক্ত। ঘুরে দাঁড়িয়ে ভাল করে দেখলুম, ছায়া পড়েছে পথে। মানে অশরীরী নয়।

মনে পড়ে গেল হট করে পার্থ বসুর কথা। কলকাতার অনুজপ্রতিম বন্ধু। সোজাসাপটা গুণী মানুষ। দাপটে রাজত্ব করেন বেসরকারি আপিসের স্ব-রাজ্যে। মুম্বই শহরে বেড়াতে এসেছিলেন। পদধূলি পড়েছিল এই ব্রাহ্মণের কুটিরে। বিকেলের পড়ন্ত আলোয় হাঁটতে গিয়েছিলুম লোখন্ডওয়ালার পশ্চিমে। নতুন সদর রাস্তা তৈরি হয়েছে এক কিমি লম্বা। এক ধারে জলাজমিতে অফুরান ঝোপঝাড়। অন্য ধারে বাংলোবাড়ির শেষ সারি। চলতি নাম ব্যাকরোড। যানবাহন তেমন নেই। বেশ নিরিবিলি। স্বাস্থ্যসচেতন নাগরিক সকাল-বিকেল হাওয়া খেতে আসে। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে এলে এসে জোটেন বুভুক্ষু জুটিরা। আদর-টাদর খাওয়াখাওয়ি করেন।

শৌখীন সারমেয়-পালকেরা তাঁদের প্রাণীদের নিয়ে আসেন হাঁটাতে এবং প্রাকৃতিক ত্যাগাদির তাগিদে। তত্‌সঙ্গে উভয়পক্ষের কিছু খেলাধুলা জাতীয় আদিখ্যেতা যুক্ত হয়। এই সব দৃশ্য থেকে নিজেদের গা বাঁচিয়ে দু’জনে হাঁটছি। পার্থ ত্রস্ত কণ্ঠে বলল, “উল্টো ফুটে চলুন।” বলে রাস্তা পার হতে পা বাড়াল।

—“কেন, কুকুরকে এত ভয়!” ওকে খোঁচা দিলুম।

জবাবে বললে, “না পাওয়ার কোনও সঙ্গত কারণ নেই।”

পাশের ছোট রাস্তায় ঢুকে হাঁটছি। রাস্তাটি অল্প দূরেই শেষ হয়েছে জলা ভূমিতে। সহসা সামনে তাকিয়ে পার্থ একে বারে অ্যাবাউট টার্ন। ওর চোখমুখ দেখে ব্যাপার আন্দাজ করার আগেই টনক আমারও নড়েছে। হলুদ রঙের গুটিকয়েক নেড়ি কুত্তা। জিগ্যেস করলুম, “কী হল?”

“না না ওদের বিশ্বাস নেই! গলায় বেল্ট বাঁধা মালিকের সঙ্গে থাকা কুকুর তবু ভাল। এরা একেবারে লাগামহীন বেপরোয়া। সামলাবার কেউ নেই। কখন তেড়ে আসবে, কামড়ে দেবে, তার ঠিক নেই। আর কামড়ালে! না না চলুন ফেরত।”

ন’বছরের মেয়ে সোনাভির কচি যন্ত্রণাকাতর মুখটি ভেসে উঠল মনতাজে। গেল সপ্তাহের দুর্ঘটনা। ভিলে পার্লের বাড়ি থেকে সোনাভি চিত্লে ভোর সওয়া ছ’টায় বেরিয়েছিল রোজকার মতো। বই-খাতার ব্যাগ, জলের বোতল ইত্যাদি নিয়ে স্কুলবাস ধরবে বলে হাঁটছিল রাস্তা দিয়ে। বাবা অভিজিত্‌ও সঙ্গে ছিলেন। দেরি হয়ে গিয়েছিল বলে একটু আগে আগে হাঁটছিলেন। বাস থামাবার জন্য। বাবার নাগাল পেতে যেই সোনাভি দৌড় দিয়েছে, অমনি রাস্তার নেড়ি কুকুর একটা ধাওয়া করেছে পিছনে। ভয় পেয়ে চিত্‌কার করে সোনাভি আরও জোরে ছুটছে। আরও ক’টা কুকুর জুটে তাড়া করে এসেছে। ওকে ধরে ফেলে বেচারির বাহু ও পেটের মাংস কামড়ে ছিঁড়ে নিয়েছে।

সোনাভির মা প্রিয়াংকা জানালেন, “আজ নিয়ে আট দিন হল। রোজ সকাল-বিকেল দুটো করে ইঞ্জেকশন চলছেই। এ ছাড়া, অন্যান্য চিকিত্‌সার জন্যে একদিন অন্তর নিয়ে যেতে হচ্ছে ডাক্তারের কাছে।”

ওঁদের গোটা পরিবার ও প্রতিবেশীদের ঘুম গেছে ছুটে। বারো দিন অবধি নজর রাখতে হবে, যে সব কুকুর কামড়েছে তাদের জলাতঙক হয় কিনা।—ডাক্তারের বক্তব্য। ভারী অসহায় অবস্থা। প্রিয়াংকা আরও জানালেন, পাড়ার যে কুকুরের দল কামড়েছে তাদের ভ্যানে তুলে নিয়ে গিয়েছিল কর্পোরেশন। কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের কাছে খবর নিয়েছিলুম ওগুলোর অ্যান্টি র্যাবিস ইঞ্জেকশন দেওয়া আছে কি না! জবাবে ওরা জানাল, নেড়িদের নির্বীজ বা স্টেরিলাইজ করে দেওয়া হয়েছে।

হা কর্পোরেশন-কত্তা। দয়া করে একটু খোলসা করবেন কি? ‘জলাতঙ্ক’ রোগের সঙ্গে নির্বীজ করার সম্পর্কটি কোথায় লুকনো? এনাদের খাতাপত্তরের হিসেবেই ‘রাস্তার কুকুর মানুষ আক্রমণ করে কামড়ে দিয়েছে’ এমন ঘটনা প্রত্যেক দিন গড়ে ১৩৫টি। আসল অঙ্ক হয়তো এর দ্বিগুণের বেশি হবে।

এ শহরে বেশ কিছু আহ্লাদি-টাইপ নাগরিক আছেন, যাঁরা ল্যাজ ন্যাড়া দেখতে ভালোবাসেন। তেনারা বেশি ভাগই সারা দিনের এঁটো-কাঁটা, উদ্বৃত্ত খাবারদাবার টিফিন ক্যারিয়ার, থলেতে এনে রাস্তার নেড়িদের খাইয়ে আহা-বাছা করে তৃপ্ত হবেন। যেন দরদ উথলে উঠছে। এনাদেরও জাত আছে। আরও উত্‌কৃষ্ট জাতির মরমীগণ মোটরগাড়ি নিয়ে বেরুবেন। বিশাল হাঁড়িতে করে গরম ভাত বা খিচুরি-মাংসের হাড় সমেত রাস্তায় উপুড় করে দিয়ে, মনে মনে দু’হাত তুলে নাচবেন, তালি দেবেন—আহা কী আনন্দ—নিত্যানন্দ! কী? না, কৃষ্ণের জীবদের সেবা।

সেই মনুষ্যেতর জীবরা যে অসহায়, নিরপরাধ শিশুকন্যা সোনাভি বা চিত্রাভিনেতা পরীক্ষিত্‌ সাহানির (বলরাজ সাহানির সুপুত্র) মতো মানুষজন হঠাত্‌ হঠাত্‌ কামড়ে ছিঁড়ে খাবে সে বেলায় এই ‘নিত্যানন্দের দল থাকেন কোথায়?

তা ছাড়া, এনাদের, তথা আমাদের হাজারো স্ব-জাতি দরিদ্রসীমার নীচে, ঠাণ্ডা সিমেন্টের ফুটপাথে প্রায় এই কুকুরদের মতোই দিনরাত্রি শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেনতাঁরা কি কৃষ্ণের জীব নন?! এই সব আহ্লাদিদের আদিখ্যেতা দেখে দেখে তাঁরা কী প্রার্থনা করবেন, হে প্রভু! পরজন্মে দয়া করে আমাদের সারমেয় বানিও! তা সে নিত্য চার-ছ’কিলো মাংসভোজী ঘরোয়া আদুরে পেডিগ্রিধারীই হই আর নিদেন হাড়-ভাত-জোটা বেজন্মা নেড়িই হই। চারপেয়ে কুত্তা করে দিও! এ বারে কর্পোরেশন উক্ত আহ্লাদিগের সামাল দিতে ফরমান জারি করেছেন। “রাস্তার কুকুরদের খাওয়ালে জরিমানা ৫০০ টাকা।” প্রতিপক্ষ পাল্টা আক্রমণ করেছে

“অভুক্ত, ক্ষুধার্ত কুত্তারা বুঝি নিরাপদ?”

তৃতীয় দল ডঙ্কা বাজিয়ে হুংকার দিয়েছে, শ্রীমতী জীল বোরার মাধ্যমে, “হ্যাঁ। আমরা বেচারি কুকুরদের খাওয়াই এবং খাওয়াব। কেউ কিছু করতে পারবে না।”

‘অল ইন্ডিয়া অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে’র সেক্রেটারি জীগীষা ঠাকুর জানিয়েছেন, “অভুক্ত পশুকে না খাওয়ালে মানুষই অমানুষিক বলে চিহ্নিত হবে”। ...ইত্যাদি ইত্যাদি নানান ভাষার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়েছে। অথচ, এই মাঝরাত্তিরে এই ভয়ঙ্কর একাকী অন্ধকার নির্জন রাস্তায় আমি, আমার শমনকে দেখছি। দমবন্ধ করে—

এখনও ‘ঘেউ’ করেননি, তাই রক্ষে! তা, এই ‘রক্ষে’ কতক্ষণ?

আমরা দুজনে এমনি নীরবে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকব কতক্ষণ? অনাদি অনন্তকাল? তা তো হতে পারে না। ‘মডেল টাউনের অন্ধকার গলিতে আলো ফুটতে এখনও কমপক্ষে ঘণ্টা পাঁচ ছয়।

ভয়ে গলা এবং আমি নিজে প্রায় ‘নীরস তরুবর শুষ্কর কাষ্ঠং!’ খাঁকারি দিলে হয়তো আওয়াজ বেরুত। সাহস নেই। হঠাত্‌ শব্দে চমকে উঠে, দিলে পায়ে বা কোমরে কামড়। নেড়ি হলেও বেশ উঁচু লম্বা। ভাবলাম মোলায়েম সুরে জিগ্যেস করি, “ভাই, আপনার কি জলাতঙ্ক রোগের ইঞ্জেকশন নেওয়া আছে?” বলতে চেষ্টা করে, গলা দিয়ে কেমন চাপা নাকি সুরে বেরুলো, “আমি, ইয়ে, আসলে আপনার পাড়ায় ঢুকে পড়েছি

উনি ঠায় দাঁড়িয়ে চেয়ে আছেন।

“ইয়ে, ভুল হয়েছে, ভাই”, বলে, কোনও ঝটকা না দিয়ে, সন্তর্পণে এক পা ’দু’পা করে পেছুতে লাগলুম।

“জীবনে আর ভাই”...

পিছু হটার গতি রইয়ে-সইয়ে বাড়াচ্ছি। মনে জোর পেয়ে ভেবে ঠিক করলুম ও কামড়াতে লাফালে আমিও ওর ঠ্যাং ধরে, কান বা লেজ কামড়ে দেব। ব্যাঙ্ককে ছাল-ছাড়ানো গোটা পাঁঠা বা খাসির মতোন ঝুলিয়ে মাংস বিক্রি হয় দেখেছি। তাইদেশীরা কুকুরের মাংস খেলে, আমিই বা কেন পারব না বলতে !

ভাবতে ভাবতে, কথা বলতে বলতে দশ পনেরো পা পিছিয়ে এসেছি। উনি ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন।

লোখন্ডওয়ালা সদর রাস্তায় অটোর আওয়াজ পেলুম। পায়ের কোলাপুরি হাতে তুলে ঘুরে যা থাকে কপালে করে দৌড় একেবারে চোঁ চোঁ। পেছনে তখন মডেল টাউনের তাবত্‌ নেড়িদের সমবেত ডাকাডাকি। আমার শমন ছিল সবার আগে। বড় রাস্তার আগেই গণ্ডিতে দাঁড়িয়ে হয়তো সারারাত চেঁচিয়েছেন শমন দলবল সমেত! গুডবাই হুজুর। এ যাত্রা আপনিও মাংস পেলেন না, আর আমাকেও তাইল্যান্ডের বাসিন্দা হতে হল না। আপনাকে থ্যাঙ্ক ইউ! বুরা না মানো হোলি হ্যায়...

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement