যুদ্ধ করে করবেটা কী বল, বুঝেছেন সেনাপতি অমিত!

রণহুঙ্কার দিয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। পুলওয়ামার ঘটনার পরে সুর চড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের এ বার ‘বড় মূল্য’ দিতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

রণহুঙ্কার দিয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। পুলওয়ামার ঘটনার পরে সুর চড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের এ বার ‘বড় মূল্য’ দিতে হবে। প্রত্যাঘাতের ক্ষেত্রে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছিলেন সেনাকেও। কিন্তু মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ আজ মন্তব্য করেছেন, ‘‘যুদ্ধের জবাব সব সময়ে যুদ্ধ হয় না। অর্থনীতি, কূটনীতিও হয়।’’

Advertisement

এবিপি নিউজের এক অনুষ্ঠানে এই ‘অন্য জবাবে’র কথা জানিয়ে অমিত বলেন, আইসিসি তো পাকিস্তানকে ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে না-ও দিতে পারে! আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা এমন কোনও ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত দেয়নি। তাহলে? বিজেপি সভাপতিকে এ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করা হয়। অমিত তখন কার্যত বোঝাতে চান, চাপ দিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে অনেক কিছুই করানো যেতে পারে।

এর পরেই দিল্লির অলিন্দে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি সরকার এখন বুঝছে, নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে কোনও বড় অভিযান হলে পাকিস্তানও জবাব দেবে? সে ক্ষেত্রে পুরোদস্তুর যুদ্ধের ঝুঁকি এড়াতেই কি বিজেপি সভাপতি সুর নরম করছেন? মাসুদ আজহারের মতো জঙ্গিকেও পাওয়ার সম্ভাবনা নেই?

Advertisement

দিল্লিতে বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, ‘‘আমরা তো যে কোনও অভিযানে সরকারের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছি। কিন্তু মোদীই তো রাজনীতি করছেন। আজ জাতীয় যুদ্ধ স্মারক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানালেন, কিন্তু সেখানেও রাজনীতি করেলেন!’’

বিষয়টি নিয়ে জট পাকতে দেখে বিজেপি বলতে শুরু করেছে, অমিত শাহ তো সরকারে নেই। প্রধানমন্ত্রী কী পদক্ষেপ করবেন, বিজেপি সভাপতি তা জানবেন কী করে? রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যখন এত কড়া ভাষায় বলেছেন, সেনাকে যে কোনও পদক্ষেপ করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তখন মোদীর উপর ভরসা রাখুন। এই প্রধানমন্ত্রীই তো সার্জিকাল স্ট্রাইক করেছেন।’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ, পুলওয়ামার ঘটনার পরে রাফাল, বেকারি, কৃষি সঙ্কটের মতো বিষয়গুলি হঠাৎ করে পাওয়া জাতীয়তাবাদের হাওয়ায় ঢেকে ফেলার প্রাণপণ চেষ্টা করে চলেছেন মোদী! সে সরকারি অনুষ্ঠানই হোক বা কোনও টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান। বিজেপি’র অন্য নেতারাও গরম গরম বিবৃতি দিচ্ছেন। তার মধ্যেই অবশ্য রাহুল গাঁধীরা করবেটে হাসিমুখে ছবি তোলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়েছেন। গত কাল কুম্ভে নিকাশি কর্মীদের পা ধুয়ে করবেটের ছবি ‘ভুলিয়ে’ দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বিরোধীদের বক্তব্য, বিজেপি নেতারা এখন বুঝছেন, ‘যুদ্ধ-যুদ্ধ’ ভাব জিইয়ে রাখা সহজ নয়। অমিতের কথায় আজ তাই পিছু হটারই ইঙ্গিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement