বরাক উপত্যকার চা বাগানগুলিতে নোট বাতিল পরবর্তী মজুরি-জটিলতা এখনও কাটেনি। বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের অভিযোগ, জটিলতার মাত্রা দিনদিন বাড়ছে।নোট বাতিলের পর নানা ধরনের বিধিনিষেধে ব্যাঙ্ক থেকে চা শ্রমিকদের মজুরির টাকা তোলা নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন বাগান মালিকরা। জেলাশাসকের নামে পৃথক অ্যাকাউন্ট করে তখন সেই সমস্যা মেটানো হয়। পরের যন্ত্রণা ডিজিটাল লেনদেনের সরকারি ঘোষণায়। এটিএম বসানোর আগেই নগদে মজুরি হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হল। নতুন সঙ্কট মেটাতে ব্যাঙ্কগুলি ‘কমিউনিটি সার্ভিস প্রোভাইডার’ (সিএসপি)-এর ব্যবস্থা করে। তাতেও সুরাহা হয়নি। বাগানগুলিতে একসঙ্গে সবাইকে মজুরি প্রদানের জন্য যত জন সিএসপি-র প্রয়োজন, নিযুক্তি দেওয়া হয়েছে অনেক কম। তার উপর, অধিকাংশ বাগান এলাকায় নেটওয়ার্ক দুর্বল। তার জেরে সিএসপি-রা যে সোয়াইপ মেশিন নিয়ে যান, সেগুলি অনেক সময়েই অকেজো হয়ে থাকে।
বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অজিত সিংহ এখনই প্রতি বাগানে এটিএম বসানোর দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘ডিসেম্বরে চা শ্রমিকরা লাগাতার ৭ দিন নিজেদের বাগানে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সেই সময় জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন ২ মাসের সময় চেয়েছিলেন বলে তাঁরা পরবর্তী কর্মকাণ্ডে যাননি।’’ সহকারী সম্পাদক দীননাথ বারই জানিয়েছেন, মুদ্রা বাতিলের পর সেই যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল, তা এখনও চলছে। কোথাও ১২ দিনে মজুরি হয়, কোথাও ১০ দিনে। মজুরি দেওয়া শুরু হলেও কে কবে পাবেন, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। উদাহরণ দিয়ে দীননাথবাবু বলেন, ‘‘লালাছড়ায় গত সপ্তাহে ৫০ শতাংশ মজুরি দেওয়া হয় সোয়াইপ মেশিনে। পরে নেটওয়ার্ক মেলেনি বলে আগের মতোই খাতায় সই নিয়ে পাওনা মেটানো হয়। তাও রাত ১০টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হয় শ্রমিকদের।’’ আগামী রবিবার বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ পরিষদের বৈঠক ডেকেছে।