ফাইল চিত্র।
যৌন নিগ্রহের মামলায় অভিযুক্তকে বলা হয়েছিল, অভিযোগকারিণীর হাত থেকে রাখি পরে আসতে। তা হলেই মিলবে জামিন। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের সেই নির্দেশ খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। অভিযোগকারিণীর তরফে ন’জন মহিলা আইনজীবীর সওয়াল শুনে সুপ্রিম কোর্ট এও মেনে নিয়েছে যে, এই জাতীয় নির্দেশ অপরাধের গুরুত্বকে খাটো করে দেয় এবং বিচারক থেকে আইনজীবী, সকলেরই এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। সার্বিক ভাবেই যৌন নিগ্রহ এবং লিঙ্গবৈষম্য সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে বিচারবিভাগের জন্য সাত দফা নির্দেশিকা তৈরি করে দিয়েছে বেঞ্চ।
বিচারপতি এ এম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তার নির্দেশে বলেছে, ‘‘জামিনের শর্ত এবং নির্দেশ মেয়েদের সম্পর্কে এবং সমাজে মেয়েদের অবস্থান সম্পর্কে বদ্ধমূল ধ্যানধারণা এবং পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এড়িয়ে চলা দরকার। অভিযোগকারিণীর পোশাক, আচরণ, অতীত, চারিত্রিক গুণাগুণ জামিনের নির্দেশকে যেন প্রভাবিত না করে, সেটা দেখতে হবে। জামিনের শর্তে অভিযোগকারিণী এবং অভিযুক্তের মধ্যে কোনও রকম যোগাযোগের নির্দেশ বা প্রয়োজনীয়তা বা অনুমোদনের প্রশ্ন থাকা উচিত নয়।’’
একই সঙ্গে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণীর মধ্যে কোনও রকম আপসরফার পরামর্শ বা সেই মর্মে উৎসাহ দেওয়ার থেকে বিরত থাকতে হবে আদালতকে, এ কথাও স্পষ্ট করে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
মামলাটি ছিল মধ্যপ্রদেশের। বিক্রম বাগড়ি নামে এক ব্যক্তি যৌন নিগ্রহের দায়ে বন্দি ছিল। গত বছর ২০ এপ্রিল সে ইনদওরে জামিনের আবেদন করে। হাইকোর্টের ইনদওর বেঞ্চ গত ৩০ জুলাই তাকে শর্তাধীনে জামিন দেয়। সেই শর্তের অন্যতম ছিল, রাখির দিন তাকে অভিযোগকারিণীর বাড়ি গিয়ে রাখি বেঁধে নিয়ে আসতে হবে। এবং সেই ছবি আদালতে পেশ করতে হবে। ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়।