মণিপুর সফরের তৃতীয় দিনে রাজ্যের উচ্চ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহ। ছবি: টুইটার।
সোমবার থেকে টানা চার দিনের জন্য মণিপুর সফরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অশান্তির মধ্যে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে পা রেখে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেন অমিত শাহ। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে আসার পর সেখানকার পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। বুধবারেও মণিপুরের বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ‘জঙ্গিদের’ মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দুই তরফ থেকে চলেছে গুলিও। জ্বলেছে ঘরবাড়ি।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুধবার ইম্ফলের ত্রাণ শিবিরগুলিতে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। শিবিরে আশ্রিত কুকি এবং মেইতেই জনজাতির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। মণিপুর সফরের তৃতীয় দিনে রাজ্যের উচ্চ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন শাহ। অমিত শাহ বলেন, ‘‘আমাদের সকলের উদ্দেশ্য একটাই। শান্তি এবং সম্প্রীতির পথে মণিপুরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। সংঘর্ষের জেরে যে পরিবারগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা যেন শীঘ্রই নিজেদের বাড়ি ফিরতে পারে, তা নজরে রাখতে হবে।’’
বুধবার মোরেহ এবং কাংপোকপির নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক এবং নাগরিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন অমিত শাহ। মণিপুর রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে যে সকলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তা টুইট করে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্রের নিরাপত্তা বাহিনী, ভারতীয় সেনা এবং মণিপুর পুলিশ সকলে একসঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে তৎপর হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহও রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি লক্ষ করে রাস্তা ঘেরাও না করার জন্য অনুরোধ করেছেন। এর ফলে ত্রাণ শিবিরগুলিতে যথা সময়ে ত্রাণ তহবিল পৌঁছতে দেরি হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
অন্য দিকে, বেআইনি অস্ত্র ব্যবহার নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে যাঁরা অস্ত্র লুট করেছেন তাঁদের আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যদি কারও কাছে বেআইনি অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়, তবে তাঁর বিরুদ্ধে যে কঠিন পদক্ষেপ করা হবে সে বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।রাজ্যে এই সংঘর্ষ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর এই প্রথম মণিপুর সফরে গিয়েছেন শাহ।
গত ৩ মে থেকে মেইতেই এবং কুকি জনজাতির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে মণিপুরে। তার জেরে ইতিমধ্যেই ৭৫ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। ঘরছাড়া অনেকেই। সোমবার অমিত শাহের সফর শুরুর আগে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মীও।