জঙ্গি হামলায় ফের রক্তাক্ত কাশ্মীর উপত্যকা। গত কয়েকটি হামলার মতো এ বারও নিশানায় ছিল ভারতীয় সেনা বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, কাল গভীর রাতে দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলার কুঙ্গনি এলাকায় জঙ্গি বিরোধী অভিযান চালিয়ে ফিরছিল সেনার একটি কনভয়। রাত দু’টো নাগাদ চিতরগামের কাছে মলু এলাকায় আচমকা কনভয়টির উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। সংখ্যায় জনা পাঁচেক ছিল তারা। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ৪৪ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের তিন জওয়ানের। গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীনগরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচ জন। তাঁদের মধ্যে এক জন মেজর এবং এক জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল রয়েছেন। জঙ্গিদের সঙ্গে সেনার গুলিযুদ্ধের মাঝে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক স্থানীয় বাসিন্দারও। তাঁর নাম জানা বেগম। সেনার সঙ্গে জঙ্গিদের প্রায় এক ঘণ্টা গুলির লড়াই চললেও সব জঙ্গি পালিয়ে গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে গোটা রাজ্যে। হামলার দায় স্বীকার করেছে হিজবুল মুজাহিদিন গোষ্ঠী।
দু’সপ্তাহে এ নিয়ে চার বার সেনার উপর হামলা চালাল জঙ্গিরা। উত্তর ও দক্ষিণ কাশ্মীর মিলিয়ে আগের তিনটি হামলায় মৃত্যু হয়েছে ছয় সেনার।
সেনার এক শীর্ষ কর্তা জানান, কাল রাতের ঘটনায় আহতদের মধ্যে মেজর অমরদীপ সিংহের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর পেটে ও ঘাড়ে গুলি লেগেছে। নিহত তিন জওয়ানের নাম গুলাম মোহিউদ্দিন, শ্রীজিৎ এম জে এবং বিকাশ সিংহ।
শ্রীজিৎ কেরলের পলাক্কড়ের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর মামা বিজক কুমার কলকাতায় থাকেন। এ দিন বিজক আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ছোটবেলায় শ্রীজিতের বাবা তাঁদের ছেড়ে চলে যাওয়ায় বিজকই ছিলেন শ্রীজিতের অভিভাবক। ২০০২ সালে ওএনজিসিতে চাকরি পেয়েছিলেন শ্রীজিৎ। পরে মামার উৎসাহেই সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। মাস ছয়েক আগে কাশ্মীরে বদলি হন তিনি। এ দিন শ্রীজিতের ছবি বুকে আঁকড়ে বিজক বলেন, ‘‘সেনায় যোগ দিতে উৎসাহ না দিলে এ দিন দেখতে হতো না।’’ ভাগ্নের অন্ত্যেষ্টিতে কেরলে যাবেন বিজক। বন্দর এলাকার তৃণমূল নেতা বাবলু করিম তাঁর যাওয়ার তোড়জো়ড় করছেন বলে জানা গিয়েছে।