পড়ুয়াদের আন্দোলন গড়াল ৩০ দিনে।—ছবি রয়টার্স।
ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে পড়ুয়াদের আন্দোলন গড়াল ৩০ দিনে। বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল। তবু রফার দেখা নেই জেএনইউয়ে।
সকলের জন্য সস্তায় শিক্ষার দাবিতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজ প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল জেএনইউয়ের ছাত্র সংগঠন জেএনইউএসইউ। বর্ধিত ফি পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লির সেন্ট্রাল পার্কে আজ মিছিলে হাঁটলেন জেএনইউয়ের পড়ুয়ারা। পা মেলালেন অন্য প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ মানুষেরাও। গড়ে উঠল মানব-শৃঙ্খল।
তারই ফাঁকে জেএনইউএসইউয়ের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষের অভিযোগ, ‘‘এত দিন ক্লাস বন্ধ। আমরা চাই এই সমস্যা দ্রুত মিটুক। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ছাত্র-প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলেই বসতে চাইছেন না উপাচার্য!’’ তবে ফি বৃদ্ধির জেদ থেকে কর্তৃপক্ষ ধীরে হলেও সরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন বলে মনে করছেন তাঁরা। ঐশীর কথায়, হঠাৎ মাঝরাতে গড়া এক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এখন দারিদ্র সীমার নীচে থাকা পড়ুয়াদের বর্ধিত ফি ৭৫% কমানোর কথা বলা হচ্ছে। অন্যদের জন্য ৫০%। কিন্তু সমস্ত পড়ুয়ার জন্য ফি আগের জায়গায় ফিরে না-যাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে বলে তাঁর দাবি। ছাত্র সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকেত মুন বলেন, ‘‘লড়াই আর জেএনইউয়ে আটকে নেই। আইআইটিতে ফি বাড়িয়েও হালে তা কমানোর কথা বলছে কেন্দ্র। আমাদের সমর্থনে এ দিন কলকাতায় তিনটি মিছিল হয়েছে। পাশে দাঁড়িয়েছে সারা দেশ।’’ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, এমস, আইআইটি, ইগনু— সব মিলিয়ে, প্রায় দেড় হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংগঠন চিঠি মারফত এই লড়াইয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে বলে ইউনিয়নের দাবি।
জেএনইউয়ের শিক্ষক সংগঠন জেএনইউটিএ-র সম্পাদক সুরজিৎ মজুমদার জানান, এ দিন দেশজোড়া এই প্রতিবাদের সমর্থনে এবং সরকারি টাকায় শিক্ষার (পাবলিক এডুকেশন) দাবিতে ধর্নায় শামিল হয়েছেন তাঁরাও। আগামিকাল ক্যাম্পাসে আসবেন দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘ফিজ মাস্ট ফল’ আন্দোলনের কর্মী ফাসিহা হাসান এবং গোরক্ষপুরের সাসপেন্ড হওয়া বিতর্কিত চিকিৎসক কাফিল খান।
আজ নতুন করে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। তাঁর মেয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বর্ণপদক পাওয়ার পরে সেই ছবি টুইট করেছিলেন রমেশ। বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা ওই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কম খরচে পড়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বরাদ্দ বাড়াতে রাজি নন মন্ত্রী। সব ছাত্রছাত্রীর যে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার ক্ষমতা নেই, সেই কথা কি তিনি মাথায় রাখেন না?’’