সনিয়া গান্ধী। ফাইল চিত্র।
লোকসভায় দাঁড়িয়ে সনিয়া গান্ধী একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ কমানোর অভিযোগ তুলতেই রে রে করে আসরে নেমে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
আজ কংগ্রেস সভানেত্রী লোকসভায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ কমানোয় কর্মীদের মজুরি আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। পাঁচ রাজ্যের ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির পরে সংসদের চলতি অধিবেশনে এই নিয়ে তৃতীয় বার মুখ খুললেন সনিয়া। প্রথম বারে ফেসবুক-টুইটারকে ভোটারদের প্রভাবিত করতে কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলেছিলেন। তার পরের দফায় কোভিডের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া মিড-ডে মিল ফের চালু করার দাবি জানিয়েছিলেন। আগের দু’বার বিজেপি কোনও জবাব দেয়নি। আজ সনিয়া গোড়াতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম না করে কটাক্ষ করে বলেন, এক সময় এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পকে কিছু লোক কটাক্ষ করেছিল। অতিমারির সময় সেই প্রকল্পই গরিবদের সাহায্য করেছে। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ইউপিএ সরকারের একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে ‘গর্ত খোঁড়ার প্রকল্প’ বলে সংসদে কটাক্ষ করেছিলেন। সনিয়ার ইঙ্গিত ছিল সে দিকে। তিনি অভিযোগ তোলেন, এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত যত টাকা রাজ্যগুলির কাছে গিয়েছে, অনেক রাজ্যে তার থেকে বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। তার পরিমাণ ৫ হাজার কোটি টাকা। এ বারের বাজেটে ২০২০-র তুলনায় ৩৫ শতাংশ কম অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। অথচ বেকারত্ব বাড়ছে।
সনিয়ার অভিযোগের পরেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ ও তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর পাল্টা অভিযোগ তুলে দাবি করেন, সনিয়া যা বলছেন, তা সত্যের অপলাপ। সনিয়া রাজনীতি করছেন। গিরিরাজ বলেন, ইউপিএ-সরকারের শেষ বছরে একশো দিনের কাজে মাত্র ৩৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। মোদী জমানায় বরাদ্দ ১.১২ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। অনুরাগ বলেন, ইউপিএ সরকারের আমলে এই প্রকল্পে বিপুল দুর্নীতি হত। মোদী সরকারের আমলে একে দুর্নীতিমুক্ত করা হয়েছে। কর্মীদের মজুরি সরাসরি জন ধন অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে। লোকসভায় কংগ্রেসের সাংসদরা পাল্টা প্রতিবাদ করেন। অনুরাগ বলেন, সনিয়া একটা বিষয় তোলার পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিয়েছেন। তার পরেও কেন বিরোধীরা সমালোচনা করছেন!
সনিয়া আজ অভিযোগ তুলেছেন, রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে, সামাজিক সমীক্ষা ও লোকপাল নিয়োগ না হলে শ্রমিকদের বাজেটের অর্থ মঞ্জুর হবে না। সামাজিক সমীক্ষা কার্যকর করা হোক। কিন্তু তার জন্য গরিব কর্মীদের শাস্তি দেওয়া ঠিক নয়। যথেষ্ট পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ করা হোক। কাজের ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি নিশ্চিত করা হোক। মজুরি দিতে দেরি হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।