ছবি সংগৃহীত।
মুনাফার লোভে ফেসবুক তার যন্ত্রমেধা ও গণনাপদ্ধতি তথা অ্যালগোরিদমের মাধ্যমে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছেন ওই সংস্থারই এক প্রাক্তনী, ফ্রান্সিস হাউজেন। এই বিষয়ে সোমবার কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বলেন, “ভারতবাসীর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে না কোনও সামাজিক মাধ্যমের অ্যালগোরিদম। তাঁর অভিমত, ইন্টারনেটের চরিত্র নিরন্তর পাল্টে চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আইনকানুন ও বিচার ব্যবস্থাতেও বদল আনতে হবে। সরকার সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
মানুষের ভালমন্দ বিচার না করে ফেসবুক শুধুই মুনাফার লক্ষ্যে চলছে হাউজেনের এই হুঁশিয়ারি বার্তায় বিশ্ব জুড়েই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রতি মাসে বিশ্বের ২৯১ কোটি মানুষ এই মাধ্যমটি ব্যবহার করেন। ভারতে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪১ কোটি। এমন একটি মঞ্চের মাধ্যমে ঘৃণা-বিদ্বেষ ও ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ার বিরুদ্ধে ভারত সরকার কী করছে, জানতে চাওয়া হয়েছিল রাজীবের কাছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জানান, অ্যালগোরিদমের পক্ষপাত সম্পর্কে ব্যক্তিগত ভাবে তিনি ও সরকার ভাল রকম ওয়াকিবহাল। ২০১৯-এ তিনি সংসদেও এ বিষয়ে বলেছেন।
রাজীবের কথায়, “বুঝতে পারছি মানুষের হস্তক্ষেপের জায়গা নিয়ে নিচ্ছে কিছু অ্যালগোরিদম। এগুলিতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকেই। সেই ভুল না বুঝে হতে পারে। আবার এটা ইচ্ছাকৃত ভাবেও একপেশে হতে পারে। সংস্থাগুলিকে এমন অ্যালগোরিদম তৈরি করতে হবে, যাতে তা ভারতবাসীর মৌলিক অধিকারগুলিকে লঙ্ঘন না করে।” মৌলিক অধিকারগুলি কী কী, তা-ও এই সূত্রে উল্লেখ করেন মন্ত্রী: বৈষম্য না করা (সংবিধানের ১৪তম অনুচ্ছেদ), মত প্রকাশের স্বাধীনতা (১৯তম অনুচ্ছেদ) ও ব্যক্তি পরিসরের তথ্যের গোপনীয়তা (২১তম অনুচ্ছেদ)।
রাজীবের বক্তব্য, রোজ ঝুড়ি ঝুড়ি অভিযোগ আসছে। দেশের বিধি, আইন ও বিচার ব্যবস্থাতেও বদল আনতে হচ্ছে সেগুলির মোকাবিলা করতে। দেশের বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০০০ ও ২০০৮ সালের। তথ্যপ্রযুক্তি বিধি অবশ্য হালে চালু হয়েছে। তবে নেট জগত নিরন্তর পাল্টাচ্ছে। তার আইনকানুনও পাল্লা দিয়ে পাল্টাতে হবে। সরকার সেই চেষ্টা নিরন্তর চালিয়ে যাচ্ছে বলে আশ্বাস দেন তিনি। হাউজ়েন ফেসবুকের অন্দর মহলের উদ্বেগজনক তথ্য সামনে নিয়ে আসার পরপরই কেন্দ্রীয় সরকার সংস্থাটিকে চিঠি পাঠিয়ে তাদের অ্যালগোরিদম ও পোস্ট ঝাড়াই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।