কার্বি পাহাড়ে ছড়িয়ে ‘ড্রাগনের রক্ত’

ওই এলাকায় মেরেকেটে ৫০টি গাছ আছে। আশপাশে পাথর খাদান ও পাথরকুচি কারখানা থাকায় বংশবৃদ্ধি ও সংরক্ষণ ব্যহত হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

এই সেই ‘ড্রাগনস ব্লাড’ গাছ। নিজস্ব চিত্র

ড্রাগনের রক্ত ঝরছে পাহাড়ে! না ‘গেম অফ থ্রোনস’ সিরিজের কাহিনি নয়। বাস্তবেই। তাও আবার ‘কিংস ল্যান্ডিং’য়ে নয়, এই অসমের কার্বি আংলংয়ে! নামের মিল থাকলেও আদপে কার্বি আংলংয়ের ‘ড্রাগনস ব্লাড’ এক প্রজাতির গাছ। যার দেখা ভারতে এই প্রথম মিলল।

Advertisement

বৈজ্ঞানিক নামে ‘ড্রাকাইনা কাম্বোডিয়ানা’। এই গাছের দেহনিঃসৃত রস বাতাসের সংস্পর্শে এলেই ঘন লাল তরলের চেহারা নেয়। যাকে ড্রাগনের রক্তের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এই ড্রাগনের রক্তের তুমুল চাহিদা চিনে। তা থেকে না কি তৈরি হয় মূল্যবান ওষুধ।

উত্তর অসমের মুখ্য বনপাল জিতেন্দ্র শর্মা কার্বি আংলংয়ের ডংকা সারপো এলাকায় পাথুরে পাহাড়ের গায়ে গাছটি খুঁজে পান। তারপর চার বছর ধরে চলে গবেষণা। গবেষণায় যোগ দেন ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানী হুসেন আহমেদ বরভুঁইঞা ও নাগাল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু দে। এটি যে ‘ড্রাগনস ব্লাড’ প্রজাতির সদস্য, তা প্রমাণিত হওয়ার পরে সদ্য টেক্সাসের বটানিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জার্নালে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

Advertisement

শর্মা জানান, ভারতে ‘ড্রাকাইনা’ প্রজাতির ন’ধরনের গাছের দেখা মেলে। কিন্তু ‘ড্রাকাইনা কম্বোডিয়ানা’ এই প্রথম মিলল। চিনে এই গাছের রস থেকে তৈরি দেশীয় ওষুধ খুবই মূল্যবান। গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে ক্ষত নিরাময়, ফাঙ্গাস রোধ, ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধক, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ওষুধ তৈরি হয় সেখানে। প্রচুর চাহিদার জন্য এই গাছ কাটা হচ্ছে বেশি। সংখ্যায় দ্রুত কমছে। চিনে ইতিমধ্যে এই গাছ বিপন্ন তালিকাভুক্ত। তাই গন্ডারের মতো ‘ড্রাগনস ব্লাড’-এর জন্যও চিনের চোখ অসমের দিকে পড়তে পারে বলে পরিবেশবিদদের আশঙ্কা।

শর্মা জানান, ওই এলাকায় মেরেকেটে ৫০টি গাছ আছে। আশপাশে পাথর খাদান ও পাথরকুচি কারখানা থাকায় গাছটির বংশবৃদ্ধি ও সংরক্ষণ ব্যহত হচ্ছে। প্রাকৃতিক নিয়মে গাছটির বংশবৃদ্ধিতেও সমস্যা রয়েছে। এই গাছের বীজ পাখিতে ছড়ায়। কিন্তু গাছের ফল এতই বড় যে কয়েকটি বড় প্রজাতির পাখি ছাড়া সব পাখি এই ফল খেতে পারে না। শর্মা, দে, বড়ভুঁইঞারা এই গাছের ওষধি ও বাস্তুতান্ত্রিক মূল্যের কথা তুলে ধরে অবিলম্বে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement