National News

সব ধর্ম মিলে গেল শাহিনবাগের পথে

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘সর্ব ধর্ম সমভাব’-এর ভাবনাকে জনপ্রিয় করেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:১১
Share:

রবিবার রাতের শাহিনবাগ। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

পাশাপাশি সকলে।

Advertisement

কেউ পড়ছেন কোরান, কেউ বাইবেল। কেউ আবার যজ্ঞে ঘৃতাহুতি দিয়ে পাঠ করছেন গীতা। এক দল শিখ ব্যস্ত কীর্তনে।

কোনও ধর্মস্থল নয়, দিল্লির শাহিনবাগে রাস্তার উপরে আজ সকালের ছবি। নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রতিবাদ অবস্থান আগামিকাল, সোমবার এক মাসে পা রাখতে চলেছে। তার আগে সব ধর্মের মানুষের প্রার্থনার আয়োজন। এক সঙ্গে হাজির হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও খ্রিস্টান।

Advertisement

ধর্মগ্রন্থ পাঠের সঙ্গেই ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ। ‘ভারতের সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ’ চরিত্রকে বজায় রাখতে শপথ নিলেন সকলে। সঙ্গে অম্বেডকরের ছবি। এবং জাতীয় পতাকা।

আরও পড়ুন: জেএনইউ চত্বরে তাণ্ডবে দায়ী উপাচার্যই, দাবি কংগ্রেসের

আজ রবিবার, ছুটির দিন। ভিড় আরও বেড়েছে শাহিনবাগে। দলে দলে এসেছেন মানুষ।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘সর্ব ধর্ম সমভাব’-এর ভাবনাকে জনপ্রিয় করেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। আজ সিএএ-এনআরসি বিরোধী লড়াইয়ে নেমে সেই ভাবনাকেই সামনে নিয়ে এলেন শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা। সিএএ-বিরোধী স্লোগান, দিল্লির প্রবল ঠান্ডায় রাস্তার উপরে মহিলা-শিশুদের দিনভর অবস্থান, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কারও কারও টানা অনশনের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যেই শাহিনবাগ আন্দোলন গোটা দেশের নজর কেড়েছে। আজ তাতে নতুন মাত্রা যোগ করতে চেয়েছেন বিক্ষোভকারীরা, সব ধর্মের মানুষকে কাছাকাছি এনে।

সপ্তাহখানেক আগে ধর্মীয় স্লোগান দেওয়ায় জামিয়া মিলিয়া থেকে আসা একটি মিছিলকে ফিরিয়ে দিয়েছিল শাহিনবাগ। বলেছিল, ধর্মকে তারা ঢুকতে দেবে না। উদ্যোক্তাদের তরফে সোনু ওয়ারসি আজকে প্রার্থনাসভা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ধর্মকে ঢোকাতে চাইনি। চেয়েছি সব ধর্মের মানুষের উপস্থিতিটা বোঝাতে। তাই প্রার্থনাসভা। শুধু মুসলিমেরা এখানে নেই, তা বোঝানো জরুরি। এর মধ্যে ধর্মের সংকীর্ণতার জায়গা নেই।’’

দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে লেখা রয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাদের নাম। আর শাহিনবাগে বিক্ষোভস্থলে রাখা হয়েছে ইন্ডিয়া গেটের একটি প্রতিরূপ। সেখানে লেখা সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভের সময়ে নিহতদের নাম। তার কাছেই অনশনে বসেছেন ৪৪ বছর বয়সি জয়নাল আবেদিন। ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ থেকে। পরে যোগ দিয়েছেন ৪০ বছর বয়সি মেহরুন্নেসা। এ দিন সন্ধ্যায় শাহিনবাগে যান কংগ্রেস নেতা শশী তারুরও। তার আগে তিনি গিয়েছিলেন জেএনইউয়ে। কথা বলেন ঐশী ঘোষের সঙ্গেও।

সিএএ আইন সংসদে পাশ হওয়ার পরে শুক্রবারই এটি রূপায়ণ করার জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে অবশ্য কোনও ফারাক পড়েনি শাহিনবাগের ‘দাবাং দাদি’দের। রাস্তায় নেমে আন্দোলনের শুরু থেকেই তিন বৃদ্ধা ছিলেন প্রথম সারিতে। আজ এক মাস পরেও একই ভাবে আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অটল রয়েছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement