প্রতীকী ছবি।
জঙ্গিদের ছোড়া বোমার ঘায়ে উড়ে গিয়েছিল ডান হাতের বুড়ো আঙুল-সহ চারটি আঙুল। কেবলমাত্র তর্জনীটাই অক্ষত ছিল। সে প্রায় বছর দুয়েক আগের কথা। সেই থেকে ঠিকঠাক ভাবে রোজকার কাজকর্ম করতেও অসুবিধায় পড়তে হত বছর বাইশের ইরফান উল্লাহের। নিজের দেশে তো বটেই, চিকিৎসার জন্য পড়শি দেশ পাকিস্তানের হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন ইরফান। কিন্তু, কোনও সুরাহা হয়নি। শেষমেশ নয়ডার চিকিৎসকেরাই ফিরিয়ে দিলেন তাঁর বুড়ো আঙুল। ইরফানের বাঁ-পায়ের একটি আঙুল দিয়ে তৈরি করে দিলেন হাতের বুড়ো আঙুল।
গত মাসের শেষে এ দেশে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন ইরফান। সেখানকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন
ওটিতে ঝগড়া করলেন ডাক্তাররা, মৃত্যু হল শিশুর, ধরা পড়ল ক্যামেরায়
চলতি মাসের গোড়ায় চলে তাঁর অস্ত্রোপচার। প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টার পর এই আপাত অসাধ্যসাধন করেছেন ওই বেসরকারি হাসপাতালের প্লাস্টিক, এস্থেটিক এবং রিকনস্ট্রাকটিভ বিভাগের শল্য চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট আশিস রাই বলেন, “অপারেশনের আগে প্রথমেই দেখে নেওয়া হয় ইরফানের হাতের হাড়, শিরা, ধমনী, টেন্ডন (পেশী) ও জয়েন্টের কতটা ক্ষতি হয়েছে। এর পর তার পায়ের আঙুল থেকে একটি আঙুল কেটে তাকে বুড়ো আঙুল হিসেব বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জন্য রোগীর অন্য হাতের বুড়ো আঙুলের মাপ নেওয়া হয়। এর পর সেই সাইজ মতো তাঁর বাঁ-পায়ের দ্বিতীয় আঙুল কেটে তা ডান হাতে জোড়া হয়।” এই অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে বেশ সাবধানতা বজায় রাখতে হয়েছে চিকিৎসকদের। অস্ত্রোপচারের পর যাতে তাঁর আঙুলের জয়েন্ট, লিগামেন্ট ও ধমনী ঠিকঠাক কাজ করে সে দিকে বিশেষ নজর দিতে হয়েছিল তাঁদের। হাসপাতালেরই আর এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পর এখন ডান হাত দিয়ে জিনিসপত্র তুলতে পারছেন ইরফান। তবে এতেই শেষ নয়। পায়ের থেকে আরও একটি আঙুল কেটে তা ডান হাতে জোড়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। যাতে আরও স্বাভাবিক ভাবে দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে পারেন ইরফান।
আরও পড়ুন
মেয়ে? ওদের আমি বিছানায় দেখেছি, বলছেন হানিপ্রীতের প্রাক্তন স্বামী
এই সফল অস্ত্রোপচারের পর দু’সপ্তাহ হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন ইরফান। গত ২৭ অগস্ট তিনি কাবুলে নিজের বাড়িতে ফিরে যান। তবে দেশে ফেরার আগে হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি তিনি। তাঁর কথায়, “গত দু’বছরে যে কী অসহায় অবস্থায় কেটেছিল কী বলব! নিজে থেকে কোনও কাজ করতে পারতাম না। ডাক্তারদের চেষ্টায় এখন অন্তত রোজকার কাজকর্ম করতে পারব। অন্যদের মুখ চেয়ে বসে থাকতে হবে না।”