বিশ্ব জুড়ে সাইবার হানায় এখন পর্যন্ত ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় কোনও আঁচ লাগেনি। এটিএম খোলা থাকবে কি না, এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ালেও ব্যাঙ্কগুলির দাবি, এটিএম পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। কারণ, এটিএমগুলি ঠিকঠাক চালানোর উপযুক্ত প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো তাদের আছে। তা ছাড়া, এটিএমে কোনও তথ্য জমা থাকে না। ফলে তথ্যকে ‘পণবন্দি’ করে মুক্তিপণ চাওয়ার কোনও সুযোগও নেই বিশ্ব জুড়ে ত্রাস ছড়ানো ভাইরাস ‘ওয়ানাক্রাই’ বা তার জাতভাইদের।
দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার দাবি, এই ধরনের হামলা মোকাবিলায় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ রাজ্যে তাঁদের কোনও এটিএম বন্ধ থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিয়েছেন স্টেট ব্যাঙ্কের কলকাতা সার্কেলের চিফ জেনারেল ম্যানেজার পার্থপ্রতিম সেনগুপ্ত। তাঁর দাবি, স্টেট ব্যাঙ্কের কর্মকাণ্ড চলে নিজস্ব পরিকাঠামোয়। বাইরের ইন্টারনেট ব্যবস্থার সঙ্গে এর যোগ নেই। ফলে এটিএম বা ব্যাঙ্কের শাখা— কোথাওই এই ধরনের ভাইরাস হানার আশঙ্কা কার্যত নেই।
তবে বিশ্ব জুড়ে ত্রাস ছড়িয়েছে যে ‘ওয়ানাক্রাই’ ভাইরাস, তার মূল নিশানা ‘মাইক্রোসফট-এক্সপি বা তার চেয়ে পুরনো ‘অপারেটিং সিস্টেম’। পার্থপ্রতিমবাবু মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, এ রাজ্যে স্টেট ব্যাঙ্কের ৩২০০-র বেশি এটিএম রয়েছে। এর মধ্যে হাজারখানেক চলে ‘মাইক্রোসফট-এক্সপি’-তে। এগুলির ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা বা সফটওয়্যার ‘আপগ্রেড’ করার প্রয়োজন হবে। কেন্দ্রীয় ভাবে ব্যাকএন্ড অপারেশন-এ সেই কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা চলছে। যদি তা সম্ভব না হয়, একমাত্র সে ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা ওই সব এটিএম-এ গিয়ে সফটওয়্যারে নতুন কোড যুক্ত করার কাজ অর্থাৎ ‘প্যাচ ম্যানেজমেন্ট’ সেরে আসবেন। পার্থপ্রতিমবাবুর কথায়, ‘‘এর জন্য ওই সব এটিএম পুরো বন্ধ রাখার দরকার হবে না। রিক্যালিব্রেশন বা টাকা ভরার সময় যেটুকু সময় লাগে, হয়তো সে রকমই সময় লাগবে।’’
আরও পড়ুন:মুসলিমদেরই তিন তালাক বন্ধ করতে দিন, সুপ্রিম কোর্টে জানালেন সিব্বল
এইচডিএফসি, আইসিআইসিআই, অ্যাক্সিস-সহ প্রায় সব বেসরকারি ব্যাঙ্কও জানিয়েছে, এটিএম পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কোনও খবর নেই তাদের কাছে। তবে সতর্কতামূলক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে সকলেই। অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এই কাজের জন্য তাদের কোনও এটিএম বন্ধ থাকবে না। তবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যেমন মাঝে-মধ্যেই কিছু এটিএম বন্ধ থাকে, তেমনটা হতে পারে।