নিউ ইয়র্কে জি-৪ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
বিশ্ব বদলে গিয়েছে, অথচ রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ এখনও বিগত শতাব্দীতে পড়ে রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জি-৪ রাষ্ট্রগোষ্ঠীর নেতাদের শীর্ষ বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়ে সওয়ালের সময়ে মোদী জানান, বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্যই এই সংস্কার প্রয়োজন।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়ে একটি নথির ভিত্তিতে আলোচনা শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যের সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা। ফলে, এই প্রথম বড় সুযোগ হাতে এসেছে বলে মনে করছে স্থায়ী সদস্য হতে ইচ্ছুক দেশগুলি। আজ জাপান, জার্মানি, ভারত ও ব্রাজিলকে নিয়ে গঠিত জি-৪ রাষ্ট্রগোষ্ঠীর বৈঠকে আয়োজকের ভূমিকায় ছিলেন মোদীই। সেই মঞ্চ থেকে নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়ে জোর সওয়াল করেছে ওই চার দেশ। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘দুনিয়া বদলে গিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসের মতো চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে। সাইবার দুনিয়া, মহাকাশ নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার একান্ত প্রয়োজন।’’ অভিবাসনের ফলে বহু দেশের বাসিন্দাদের ধরনও বদলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। লড়াইয়ে বিধ্বস্ত পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শরণার্থীদের ঢল আসার কথাই তিনি বলতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিষয়টিও বিশ্বের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন মোদী। তাঁর মতে, ভারত, জার্মানি, জাপান ও ব্রাজিল নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা-সহ স্থায়ী সদস্যের পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে পুরোপুরি যোগ্য।
নিউ ইয়র্কে জি-৪ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে চিন ভারতকে স্থায়ী সদস্য করার বিরোধী বলেই মনে করেন কূটনীতিকেরা।
এমনকী, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার নিয়ে আলোচনাও আটকে দিতে বেজিংয়ের তরফে কম চেষ্টা হয়নি। আবার আমেরিকা ভারতকে স্থায়ী সদস্য করার বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দিলেও লিখিত কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কারের পাশাপাশি সন্ত্রাস নিয়েও আজ মুখ খুলেছেন মোদী। জর্ডনের রাজা আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠকের সময়ে তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসের সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগ নেই। সন্ত্রাস থেকে ধর্মকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে।’’ পশ্চিম এশিয়ায় আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থানের ফলে তৈরি পরিস্থিতি নিয়ে আবদুল্লার সঙ্গে আলোচনা করেন মোদী। যুবকদের মধ্যে মৌলবাদ ছড়ানো ও ইন্টারনেটে জঙ্গিদের বার্তা প্রচারের কী ভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা।
ইরাক, সিরিয়ায় আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারের সময়ে জর্ডনের সাহায্যের জন্য আবদুল্লাকে ধন্যবাদও জানান প্রধানমন্ত্রী।