বিদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
এক কথায় পায়ের তলায় সর্ষে!
ক্ষমতায় আসার পর গত চার বছরে ৪১টি বিদেশ সফর। ছ’টি মহাদেশের ৫২টি দেশ ঘুরতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ভারত সরকার খরচ করেছে ৩৫৫ কোটি টাকা!সব মিলিয়ে নরেন্দ্র মোদী দেশের বাইরে ছিলেন ১৬৫ দিন।
তথ্যের অধিকার আইনে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে বিদেশ সফরের খরচ জানতে চেয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর আরটিআই কর্মী ভীমাপ্পা গদাদ। তাঁর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়েই একথা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও)। যদিও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে দেশের মধ্যে সফরগুলির জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে, তা জানায়নি পিএমও। এনিয়ে ক্ষোভও জানিয়েছেন ভীমাপ্পা।
মোদীর ঘন ঘন বিদেশ সফরকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে বারবার উঠেছে নানা বিতর্ক।
বিরোধীদের অভিযোগ, দেশে যখন নানা সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তা সামাল না দিয়ে তিনি ব্যস্ত থাকেন বিদেশ ভ্রমণে। নোটবন্দি, মূল্যবৃদ্ধি, কাশ্মীরের হিংসা— কোনও কিছুতেই থেমে থাকেনি তাঁর একের পর এক বিদেশ সফর।তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নাকি ভূপর্যটক, এমন কটাক্ষেও তাঁকে বিদ্ধ করেছেন বিরোধীরা। সোশ্যাল মিডিয়ার বিদ্রুপও পিছু ছাড়েনি মোদীর। ক’দিন আগে মহারাষ্ট্রে বিজেপির শরিক দল শিবসেনাও মোদীর একের পর এক বিদেশ সফরকে তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করে।
আরও পড়ুন: সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থ বেড়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি
পাল্টা হিসেবে তাঁর ফাস্ট ট্র্যাক কূটনীতি ও বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতির কথা যুক্তি হিসেবে খাড়া করা হয়েছে সরকার ও শাসক দলের তরফে। ভারতের সামগ্রিক উন্নতির স্বার্থে মোদীর সফর কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটাই ছিল উপজীব্য।
কিছুদিন আগেই মোদীর হয়ে সাফাই দিতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে ফেলেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতায় আসার পর প্রথম তিন বছরে মনমোহন সিংহের থেকে কম বিদেশ সফর করেছেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও দুই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ওয়েবসাইট মিলিয়ে দেখা গিয়েছিল, বিজেপি সভাপতির দাবি সর্বৈব ভিত্তিহীন।
যদিও প্রধানমন্ত্রীর ওয়েবসাইটে এই বছরের জানুয়ারির সুইজারল্যান্ড সফরের পর থেকে খরচের কোনও হিসেব দেওয়া নেই। শুধু তাই নয়, বিদেশ সফরের খরচ জানাতে সরকারের অনীহা বারবারই সামনে এসেছে। এর আগে সরকারি বিমানসংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াও প্রধানমন্ত্রীর বিমান খরচের তথ্য জানাতে অস্বীকার করে। কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশের কথা জানিয়েছিল তারা। যদিও বেঙ্গালুরুর আরটিআই কর্মীভীমাপ্পা গদাদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত সব তথ্য সামনে আনতে বাধ্যহল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। স্বাভাবিকভাবেই এই হিসেব মোদী-সমালোচকদের হাতে তুলে দেবে নয়া অস্ত্র।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে কষা হয় হত্যার ছক, লস্কর-ই-তৈবার নির্দেশেই খুন শুজাত বুখারি
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ