কাছাড় কংগ্রেসকে কর্ণেন্দু ভট্টাচার্যেরই শরণ নিতে হল। লাগাতার ২২ বছর দলের জেলা সভাপতি ছিলেন কর্ণেন্দুবাবু। ২০১১ সালে সাংগঠনিক নির্বাচনে না-লড়ায় অরুণ দত্ত মজুমদার বিজয়ী হন। কিন্তু অরুণবাবু জেলা কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে পাঁচ বছরের মেয়াদ পুরো করতে পারেননি। ছয় মাস আগেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্ত। এ বার তবে কে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিপাকে পড়ে দলীয় নেতৃত্ব। সকল গোষ্ঠীর গ্রহণযোগ্য মুখ বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। শেষ আশ্রয় কর্ণেন্দুবাবু। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব বুঝে নিলেন তিনি। সাংসদ সুস্মিতা দেব, প্রাক্তন সাংসদ কমলেন্দু ভট্টাচার্য সহ জেলা পর্যায়ের সব নেতাই উপস্থিত ছিলেন। গত বছর শিলচর বিধানসভার উপ-নির্বাচনে অরুণবাবু বিজেপির দিলীপকুমার পালের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যান। সে থেকে তাঁকে জেলা সভাপতি পদ থেকে অপসারণের কথাবার্তা শুরু। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর ওপর ভরসা করা যায় না, অঞ্জনবাবু আকারে-ইঙ্গিতে এমন মনোভাব আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। আজ সুস্মিতা দেবও বলেন, কর্ণেন্দুবাবু আসায় বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস সফল হবে। তিনি বুথ পর্যায় থেকে সংগঠনকে চাঙ্গা করে তুলতে নতুন জেলা সভাপতিকে পরামর্শ দেন। সুস্মিতা বলেন, ছয়মাসের মধ্যে সংগঠনে পরিবর্তন আনতে হবে। সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী অসম নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। রাখঢাক না-করেই তিনি জানিয়ে দেন, অসমে বিজেপিকে ঠেকাতে না-পারলে উত্তর-পূর্বে কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে তিনি দলের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান। রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য কমলেন্দু ভট্টাচার্য কর্ণেন্দুবাবুর নিযুক্তিকে ‘মরা গাঙে বান এসেছে’ বলে উল্লেখ করেন। কর্ণেন্দুবাবু অবশ্য মাঝের সাড়ে চার বছর নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। বরং অরুণবাবুকে পাশে বসিয়ে আবেগ মেশানো গলায় শোনান, ‘নির্বাচিত সভাপতি অরুণ দত্ত মজুমদার। তাঁকে সরিয়ে আমি সভাপতি হতে চাইনি। কিন্তু দলের নির্দেশ মানতেই হল।’
লাগাতার ২২ বছর জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন ছাড়াও কর্ণেন্দু ভট্টাচার্য দুইবার রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনেও জেতেন একবার। সন্তোষবাবুর কাছের মানুষ হিসেবেই পরিচিত তিনি। তাঁর নিযুক্তিতে সুস্মিতার লাভ হল বলে মনে করছেন রাজনীতির বিশ্লেষকরা।
প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র দীপন দেওয়ানজি বলেন, কর্ণেন্দুবাবুকে ফের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জেলা কংগ্রেসে নেতৃত্বের সঙ্কট চলছে, এই কথা বলা যায় না। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দল তাঁকেই যোগ্যতম মনে করায় সভাপতি পদে নিযুক্ত করেছে।