ফাইল চিত্র।
থাকা, খাওয়া, চিকিৎসার উপযুক্ত বন্দোবস্ত করতে হবে। মন ভাল রাখতে ব্যবস্থা করতে হবে কাউন্সেলিংয়ের। প্রয়োজনে ভজন এবং নমাজের ব্যবস্থাও করতে হবে।
বিভিন্ন সরকারি শিবিরে ঠাঁই নেওয়া প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে এই নির্দেশই দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডে এবং বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত দু’টি জনস্বার্থ মামলা ভিডিয়ো কনফারেন্সে শোনেন। সেখানে সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, মঙ্গলবার সকালে খবর অনুযায়ী, শ্রমিকরা আর কেউই রাস্তায় নেই। কিন্তু সরকারি শিবিরে কী ভাবে তাঁদের ভাল রাখতে হবে, সে ব্যাপারে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে শীর্ষ আদালত। বলেছে, শেল্টার হোমগুলির পরিচালনা পুলিশ নয়, স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে করাতে হবে। কোনও রকম হুমকি কিংবা শক্তিপ্রয়োগ চলবে না। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্র আজ স্বীকারও করে নিয়েছে যে, বরেলীতে শ্রমিকদের উপর জল ও রাসায়নিক ছড়ানো সঠিক কাজ হয়নি।
তবে তুষার মেহতা যুক্তি দেন, এই সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতায়াত করতে দেওয়া ঠিক হবে না। এতে করোনা-সংক্রমণ বাড়বে। সর্বশেষ জনগণনা রিপোর্টে ৪ কোটি ১৪ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের উল্লেখ রয়েছে। এখন করোনা-আতঙ্কে এঁরা বাড়ি ফিরতে চাইছেন। মেহতা জানান, লকডাউনের এই শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে চাইছে না কেন্দ্র। কারণ, এখনও পর্যন্ত গ্রামীণ ভারতে করোনা সংক্রমণ ঘটেনি। তবে শহর থেকে শ্রমিকেরা গ্রামে ফিরলে ১০-এর মধ্যে তিন জনের সংক্রমণ নিয়ে ফেরার আশঙ্কা রয়েছে। মেহতা জানান, ৬ লক্ষ ৬৩ হাজার জনের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। ২২ লক্ষ ৮৮ হাজার শ্রমিকের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের মানসিক চাপ কমাতে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলরের ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ কাজে বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের ব্যবহার করার কথাও বলা হয়েছে। ভজন এবং নমাজ পড়ার ব্যবস্থা যাতে থাকে, সেটাও দেখতে হবে।
এ সঙ্গেই অতিমারি নিয়ে দ্রুত তথ্য সরবরাহ করতে কেন্দ্রকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি পোর্টাল চালু করতে বলেছে শীর্ষ আদালত। ভুয়ো খবর থেকে আতঙ্ক ছড়ানো বন্ধ করতেই এই ব্যবস্থা। আদালতের মন্তব্য, ‘‘ভাইরাসের থেকে আতঙ্কেই প্রাণ যাবে বেশি।’’
কেন্দ্র বলেছিল, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কেরল হাইকোর্টেও একটি মামলা রয়েছে। শীর্ষ আদালতে যখন এই বিষয়ে বিচার করছেই, তখন হাইকোর্টগুলিকে এই ধরনের মামলা থেকে দূরে থাকতে বলা হোক। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘এই রকম পরিস্থিতিতে হাইকোর্টগুলিকে আটকানো উচিত হবে না।’’ করোনাভাইরাস নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও কেরলের দুই সাংসদ শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। বিচারপতিদের মতে, এখান থেকে কিছু ভাল প্রস্তাব মিলতে পারে।