India-China

কোন তথ্য কী ভাবে চিনের হাতে পৌঁছচ্ছে, বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে: মমতা

বহিঃশত্রুর মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অবশ্য পূর্ণ সংহতি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ০৩:৫৬
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সেনার প্রতি আস্থা রয়েছে সকলেরই। কিন্তু সীমান্তে কোনও সঙ্কটের পরিস্থিতি এলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে সে সম্পর্কে অবহিত করে, তাদের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার যথেষ্ট তৎপর নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা সর্বদল বৈঠকে শুক্রবার এই মনোভাব প্রকাশ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Advertisement

বহিঃশত্রুর মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অবশ্য পূর্ণ সংহতি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তবে পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, গত ১৯ এপ্রিল লাদাখ সীমান্তে চিনের তৎপরতার বিষয়টি ভাল ভাবে নজরে আসে। তখন কেন্দ্রের কাছে কী গোয়েন্দা-তথ্য ছিল এবং তা নিয়ে আরও আগে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল না কেন?
তাঁর ক্ষোভ, পুলওয়ামা হামলার পরেও তিনি সব দলকে ডেকে আলোচনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তখনও কেন্দ্র সেই পথে হাঁটেনি। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার এবং প্রতিটি দল মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। মমতার মতে, চিনের সে দায় নেই। বিরোধীরা সহযোগিতায় প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্র তাদের পাশে নিতে তৎপর নয় বলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা।

লাদাখ সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের বিষয়ে মমতা বলেন, ভারত ও চিনের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী সেখানে গোলাগুলি চালানো স্থগিত। কিন্তু যে হাতিয়ার চিন ব্যবহার করেছে, তা কোনও অংশে কম ভয়ঙ্কর নয়। মমতার কথায়, ‘‘এ তো বিষাক্ত কাঁটার ঝাঁক!’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ১০ সেনা বন্দি ছিলেন! সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন বিরেধীদের

সর্বদল বৈঠকে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেপাল ও ভূটানের সঙ্গে বাংলার সীমান্ত রয়েছে। উত্তর-পূর্ব থেকে টানা ধরলে ডোকলাম পর্যন্ত টানা সীমান্ত এলাকা। ওই অঞ্চলে নানা দেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। প্রথমে ডোকলাম এবং এখন লাদাখের ঘটনা মাথায় রেখে এই অঞ্চলে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, উত্তর-পূর্বের সীমান্তের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল।

চিন ভারতের সীমা পেরোতে পারেনি বলে এ দিনের সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, মমতার বক্তৃতা অবশ্য স্বাভাবিক ভাবেই তার আগে হয়ে গিয়েছিল। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সে দিনের ওই সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার যাঁরা শহিদ হয়েছেন, তাঁদের সকলের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, সেখানে নেতৃত্বে থাকা আমাদের বাহিনীর এক কর্নেলের যখন গুরুতর আহত অবস্থায় প্রবল রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তখন তাঁকে একটি নদী পেরিয়ে নিয়ে আসা রীতিমতো কঠিন কাজ ছিল। গোলাগুলি নয়, ধারালো বিষাক্ত হাতিয়ারের আঘাতেই তাঁকে মৃত্যুবরণ করতে হয়।’’

মুখ্যমন্ত্রীর মতে, করোনা পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ সঙ্কট সামাল দিতে ভারত সরকার ও সব দল যখন ব্যস্ত, সেই সময়টাকে চিন পরিকল্পনামাফিক বেছে নিয়েছে এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর জন্য। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাঁরা তার পাশে থাকবেন বলেই বৈঠকে জানিয়েছেন মমতা। তবে পাশাপাশিই তাঁর প্রস্তাব, টেলিকম, রেল বা বিমান চলাচলের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে চিনকে অন্তর্ভুক্ত না করার কথা ভাবতে হবে। এতে কিছু অসুবিধা হতে পারে কিন্তু দেশের হাতে যা আছে, তা দিয়েই কাজ সেরে নেওয়া সম্ভব। কোথায় কোন তথ্য কী ভাবে চিনের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে, এখন সেই বিষয়ে বাড়তি সতর্ক থাকার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement