ইউটিউবার এ দুরাইমুরুগান সাত্তাই। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভোটের আগে কত জন জেলে থাকবেন? এক ইউটিউবারের জামিন বহাল রেখে এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে এ দুরাইমুরুগান সাত্তাই নামের এক ইউটিউবারের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করে তামিলনাড়ু সরকার। নিম্ন আদালত ওই ইউটিউবারকে জামিন দিলেও মাদ্রাজ হাই কোর্ট তা খারিজ করে দেয়। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান সাত্তাই। সোমবার তাঁর জামিন বহাল রাখে শীর্ষ আদালত।
সোমবার মামলাটির শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চে। তামিলনাড়ু সরকারের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতি ওকার প্রশ্ন, “নির্বাচনের আগে ইউটিউবে অভিযোগ করার দায়ে যদি সবাইকে জেলে ভরতে শুরু করি, তবে ভাবতে পারছেন কত জন জেলে থাকবেন?”
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ওই ইউটিউবার স্বাধীনতার অপব্যবহার করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই। তামিলনাড়ু সরকারের তরফে আদালতের কাছে আর্জি জানিয়ে বলা হয়, অভিযুক্ত ইউটিউবার যাতে মানহানিকর কোনও মন্তব্য না করেন, তা নিশ্চিত করা হোক। বিচারপতি ওকা তামিলনাড়ু সরকারের কৌঁসুলির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, “কোনটা মানহানিকর মন্তব্য আর কোনটা নয়, সেটা কে ঠিক করবে?”
২০২২ সালের জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পেশায় ইউটিউবার সাত্তাই। তার পর নোটিস দিয়ে তামিলনাড়ু সরকারের বক্তব্য জানতে চায় শীর্ষ আদালত। ২০২১ সালে সাত্তাইকে প্রথম জামিন দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই হিসাবে মোট আড়াই বছর ধরে জামিনে রইলেন তিনি। সোমবার ওই ইউটিউবারের জামিনের বিরোধিতা করে তামিলনাড়ু সরকার জানায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর এবং ২০২৩ সালের মার্চে দু’টি এফআইআর দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তার পরেও অবশ্য সাত্তাইয়ের জামিন বহাল রাখে আদালত। লোকসভা ভোটের আগে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় এবং পর্যবেক্ষণ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।