কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
আগামী মাস থেকে শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। তার আগে উপত্যকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে-কলমে খতিয়ে দেখা ছাড়াও একাধিক পরিকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজের শিলান্যাস করতে আগামিকাল জম্মু-কাশ্মীর যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার সকালে সেখানে কাটিয়ে দুপুরে দিল্লি ফিরে এসে মণিপুর নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে বসবেন তিনি।
আগামিকাল জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে জম্মুর ত্রিকূটনগরে তাঁর মূর্তিতে মালা দিয়ে নিজের সফর শুরু করবেন শাহ। জম্মু-কাশ্মীর সংক্রান্ত ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের দাবিতে শ্যামাপ্রসাদের শুরু করা আন্দোলনই নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বাস্তবের গন্তব্যে পৌঁছেছে বলে মনে করে বিজেপি। ঘটনাচক্রে আজ জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপলক্ষে জম্মুতে ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। নিজের বক্তব্যে উপরাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘বর্তমানে উপত্যকায় যে সমন্বয়ের ছবি লক্ষ্য করা যায়, তা অতীতে ছিল না। যিনি শক্তিশালী ভারত গড়তে প্রাণ দিয়েছিলেন, আজকের শান্ত কাশ্মীর সেই শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের উদ্দেশে সব থেকে বড় শ্রদ্ধার্ঘ্য। দেরিতে হলেও আমরা তাঁর স্বপ্নকে বুঝতে পেরেছি।’’ আগামিকাল মাল্যদান অনুষ্ঠানের পরে কেন্দ্রীয় একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা রয়েছে শাহের। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল সাম্বাতে তৈরি হতে চলা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির শিলান্যাস অনুষ্ঠান। বিকেলে শ্রীনগর পৌঁছে সেখানকার বিশিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবেন শাহ। ‘ভিস্তারা’ নামে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের একটি অনুষ্ঠানেও রাতে যোগ দেবেন তিনি।
সূত্রের মতে, শনিবার সকালে আবহাওয়া ভাল থাকলে বালতালে যাওয়ার কথা রয়েছে শাহের। অমরনাথের যাত্রাপথে বালতাল একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। অমরনাথ যাত্রীদের নিরাপত্তা খতিয়েদেখতে সম্প্রতি দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছিলেন শাহ। ওই বৈঠকে সীমান্ত ছাড়াও গোটা যাত্রাপথ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে এটিই শেষ অমরনাথ যাত্রা। স্বভাবতই গোটা বিষয়টি যাতে সুষ্ঠু ভাবে সাঙ্গ হয়, কেন্দ্রের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা নিশ্চিত করতে চাইছেন। তাই নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজ বাস্তবের জমিতে কতটা এগিয়েছে, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বালতালে যাওয়ারও কথা রয়েছে শাহের।
নিরাপত্তাকর্মীদের মনোবল বাড়ানোও শাহের সফরের আরও একটি উদ্দেশ্য। ভোটমুখী ছত্তীসগঢ়ের দুর্গ-এ আজ একটি রাজনৈতিক জনসভা থেকেও সেই লক্ষ্যে বার্তা দেন শাহ। বলেন, ‘‘কংগ্রেসের আমলে ‘আলিয়া-মালিয়া-জামালিয়া’ (কথ্য ভাষায় ‘রাম-শ্যাম-যদু’-র গুজরাতি সংস্করণ) ভারতীয় সেনাদের মাথা কেটে নিয়ে চলে যেত। কিন্তু কংগ্রেস নীরব থাকত। মোদী সরকারের আমলেও পাকিস্তান অতীতের মতোই কাশ্মীরে হামলাচালিয়েছিল। কিন্তু ১০ দিনের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে যোগ্য জবাব দেন।’’ শাহের বক্তব্য, মোদী সরকারের আমলে গোটা দেশে মাওবাদী সমস্যা প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস-শাসিত ছত্তীসগঢ়ের বস্তার এলাকায় তা এখনও রয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।