প্রতীকী ছবি.
গোপনীয়তা রক্ষার্থে চোখের চাউনিতেও বাঁধ দিতে চায় জাতীয় নির্বাচন কমিশন! আর তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই বাড়তে চলেছে ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’-এর উচ্চতা।
‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’ অর্থাৎ যে ঘেরাটোপের মধ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং ভোটার ভেরিফায়েব্ল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট) রাখা হয়। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’-এর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা ছিল ২৪x২৪x২৪ ইঞ্চি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আগামী লোকসভা নির্বাচনে দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ সেই ২৪ ইঞ্চি থাকলেও উচ্চতা আরও ৬ ইঞ্চি বাড়তে চলেছে। ফলে তা হবে ৩০ ইঞ্চি। আর গত লোকসভা নির্বাচনে (২০১৪ সাল) ২৩ ইঞ্চি করে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা ছিল ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’-এর। সম্প্রতি কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে নতুন উচ্চতার ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’ ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু ৫৪৩টি লোকসভা কেন্দ্রে এই প্রথম বাড়তি উচ্চতাসম্পন্ন ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’-এ ভোট দেবেন আমজনতা।
কমিশনের মতে, গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই ইভিএম-এর ঘেরাটোপ বাড়ানো হয়েছে। কারণ, যে কোনও মানুষের ক্ষেত্রে তাঁর চোখের চাউনি (আই মুভমেন্ট) পাঁচ ফুটের নীচেই থাকে। সে কথা মাথায় রেখেই ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’-এর উচ্চতা ৩০ ইঞ্চি বা আড়াই ফুট করা হয়েছে। যাতে কোন মানুষ কোন দিকে ভোট দিচ্ছেন, তা যাতে তাঁর চোখের চাউনি দেখে বাইরে থেকে কেউ আঁচ করতে না পারেন, সে কারণেই তা বাড়ানো হয়েছে।
তবে শুধুমাত্র ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’-এর উচ্চতা বাড়ানো নয়। যে টেবিলের উপর ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট থাকবে, তার উচ্চতাও ঠিক করেছে কমিশন। সেই টেবিলও ৩০ ইঞ্চি বা আড়াই ফুট করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। বিভিন্ন স্কুলে বিশেষ করে প্রাথমিক বা অঙ্গনওয়াড়ি বিদ্যালয়ে অনেক কম উচ্চতার টেবিল ব্যবহার করা হত।
‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’ এবং টেবিল—দুইয়ের উচ্চতাই ৩০ ইঞ্চি বা আড়াই ফুট। অর্থাৎ দুই মিলিয়ে ৬০ ইঞ্চি বা পাঁচ ফুট। আর কমিশনের মত, সাধারণত, মানুষের চোখের চাউনি পাঁচ ফুটের নীচেই থাকে। সে কারণেই ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’ এবং টেবিল মিলিয়ে পাঁচ ফুট করা হয়েছে, তেমনই জানিয়েছে কমিশন।
তবে শুধু উচ্চতা বাড়ানোর নির্দেশিকাই নয়। ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’ থাকবে করোগেটেড প্লাস্টিক শিটের ‘নিউট্রাল’ রঙের অর্থাৎ যে রঙ কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা বা প্রতীকে ব্যবহৃত হয় না। ইতিমধ্যেই নতুন ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’-এর
নমুনা বিভিন্ন রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) দফতরে পৌঁছতে শুরু করেছে। যে নমুনার আদলে জেলা প্রশাসন তৈরি করবে ‘ভোটিং কম্পার্টমেন্ট’। এ বিষয়ে সিইও দফতর থেকে জেলাগুলিতে নির্দেশ যাবে।