ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে রবিবার মোদী সরকার জানিয়েছিল, কোভিডে মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে গেলে বিপর্যয় মোকাবিলার তহবিল খালি হয়ে যাবে।
সরকারের কাছে কি টাকা নেই? না কি টাকা নেই বলে সরকার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে? এই প্রশ্নের মুখে আজ মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে ব্যাখ্যা দিল, তহবিলে অর্থ রয়েছে। কিন্তু তা কোভিড মোকাবিলা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতিতে কাজে লাগানো হচ্ছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়াটা অগ্রাধিকার নয়।
কোভিডে মৃতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে জোড়া মামলা হয়েছিল। কেন ৪ লক্ষ টাকা? কারণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই ২০১৫-তে বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল। কেন্দ্রই কোভিডকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা করে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ক্ষমতা কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু কোভিডে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নে কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, এত টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে গেলে রাজ্যগুলির দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিলে আর কিছুই পড়ে থাকবে না।
সরকারের সমালোচনায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বলেন, “কোভিড অতিমারির আগে চিকিৎসার অভাব, তার পর মিথ্যে পরিসংখ্যান, এ বার সরকারি নিষ্ঠুরতা।” সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “সেন্ট্রাল ভিস্টা, বিজ্ঞাপন, মূর্তি, বিমান, ভোটের খরচ, সব কিছুর জন্য টাকা রয়েছে। কিন্তু কোভিডে মৃতদের পরিবারের জন্য টাকা নেই।” আজ মামলাকারীদের হয়ে আইনজীবী এস বি উপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, অর্থের টানাটানি দেখিয়ে ক্ষতিপূরণ মেটানোর সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে বলা রয়েছে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে রায় সংরক্ষিত রেখেছে। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ কোভিড লেখা না হলে ক্ষতিপূরণ কী ভাবে মিলবে সে প্রশ্নও উঠেছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কো-মর্বিডিটিতে মৃত্যু হলেও মৃত্যুর কারণ কোভিডই লিখতে। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, কেন্দ্রের নির্দেশিকা কি সরলীকরণ করা যায়? যাঁরা আগে মারা গিয়েছেন, কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে কোভিড মৃত্যুর কারণ লেখা নেই, তাঁদের কী হবে? সেখানে সংশোধন দরকার। মামলাকারীদের যুক্তি, অনেক রাজ্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। কিন্তু এক-এক রাজ্যে এক-এক রকম ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। সমান নীতি দরকার।