নিজের বাড়িতে রিপন চৌধুরী। গায়ে সেই জার্সি। ছবি: অমিত দাস।
শাহিদ আফ্রিদির ‘বার্তায়’ রাতারাতি সেলিব্রিটি হাইলাকান্দির রিপন চৌধুরী!
গত রাতে ফোনে বছর একুশের ক্রিকেটারের সাক্ষাৎকার নিয়েছে পাকিস্তানের প্রথম সারির দৈনিক ‘দ্য ডন’। ইন্টারভিউ নিতে চাইছে এ দেশের জাতীয় সংবাদমাধ্যম। বাড়ির সামনে ভিড় জমেছে পাড়াপড়শির। সোস্যাল মিডিয়ায় ভরেছে ‘কমেন্ট’।
১০ ডিসেম্বরের সঙ্গে আজকের মিল পাচ্ছেন না শাহিদের অন্ধ-ভক্ত রিপন। সে দিন হাইলাকান্দির নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু স্টেডিয়ামে নৈশ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ‘লাহৌর বাদশা’ দলের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। পাকিস্তানের অলরাউন্ডারের নাম, নম্বরের জার্সি পরেছিলেন। তা নিয়ে অশান্তি ছড়ায় অসমের প্রত্যন্ত জেলার ওই মাঠে। থানায় মামলা রুজু করে বিজেপি যুবমোর্চা। ১৭ ডিসেম্বর রিপনকে আটক করে পুলিশ। তবে সে দিন বিকেলেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সীমান্ত পেরিয়ে খবর পৌঁছেছিল খোদ শাহিদ আফ্রিদির কাছে। ওই ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে চিহ্নিত করে গত কাল প্রাক্তন পাক-অধিনায়ক জানিয়েছিলেন— ‘ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতি মেশানো অন্যায়। তা বন্ধ হওয়া উচিত। ভারতে যেমন পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের ভক্ত রয়েছে। পাকিস্তানেও ভারতীয় ক্রিকেটারদের ফ্যান রয়েছে।’ রিপনের বিষয়টি দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আর্জি জানান শাহিদ।
আজ হাইলাকান্দির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে রিপনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শাহিদের জার্সি পরেই বসে রয়েছেন তিনি। রিপন বলে, ‘‘একটা জার্সি নিয়ে এত কিছু হতে পারে তা ভাবিনি। শাহিদের খেলা ভালবাসি। তাই ওঁর নাম লেখা জার্সি পরেছিলাম।’’ তাঁর জন্য মন্তব্য করেছেন স্বয়ং আফ্রিদি— এ সব স্বপ্নের মতো লাগছে রিপনের। তরুণ ক্রিকেটারের কথায়, ‘‘শাহিদ আফ্রিদিকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছা অনেক দিনের। এ বার যদি কোনও ভাবে সেই সুযোগ পাই!’’
রিপন জানান, বহু কষ্টে টাকা জোগাড় করে ২০১১ সালে মোহালিতে ভারত-পাকিস্তানের খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। চেষ্টা করেছিলেন আফ্রিদির সঙ্গে দেখা করার। কিন্তু নিরাপত্তার কড়াকড়িতে পাকিস্তান দলের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেননি।
এ বার কিছুটা হলেও স্বপ্নের কাছে পৌঁছতে পেরেছেন বলে খুশি রিপন। তিনি বললেন, ‘‘অন্তত আমার নামটা তো উনি শুনেছেন। কোনও দিন হয়তো সামনে ডেকেও নিতে পারেন।’’