বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। —ফাইল ছবি
সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়েছিল, কলকাতায় অমিত শাহের সভার অনুমতি দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বিজেপি সভাপতি জানিয়ে দেন, ‘‘অনুমতি না পাওয়া গেলেও আমি কলকাতা যাব। সভাও করব। প্রয়োজনে পুলিশ আমায় গ্রেফতার করুক।’’ বেলা গড়াতে সোশ্যাল মিডিয়ার খবর খারিজ করে কলকাতা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘আসুন না, কে বারণ করেছে! গণতন্ত্রে
সবাই স্বাগত।’’
আজ পুলিশের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়, ‘একটি রাজনৈতিক দলের সভার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে কিছু অনভিপ্রেত জল্পনা আমাদের নজরে এসেছে। আমরা জানাতে চাই যে, আবেদনের ভিত্তিতে ওই সভার অনুমোদন ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে’। কলকাতা পুলিশ সূত্র বলছে, গোড়ায় ৩ অগস্ট নেতাজি ইন্ডোরে অমিত শাহের সভা করার অনুমতি চেয়েছিল বিজেপি। পরে দিন পাল্টে ১১ তারিখ কলকাতায় সম্ভাব্য পাঁচটি জায়গায় একটিতে সভা করার অনুমতি চাওয়া হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই তাদের অনুমতি দেওয়া হয়।
রাজনীতিকদের অনেকেই এই ঘটনাকে অসমের নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল দ্বৈরথের অঙ্গ হিসেবে দেখছেন। এনআরসি বিরোধী লড়াইয়ের রাশ নিজের হাতে নিয়ে তাকে দিল্লির ময়দানে নিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে অমিত শাহেরাও মমতাকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরে কংগ্রেসকে খাটো করার কৌশল নিয়েছেন। বিজেপি মনে করছে, এতে বিরোধী শিবিরে ফাটল ধরানো সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে রাফাল বিতর্ক বা দলিত সমস্যা পিছনের সারিতে চলে যাবে। সেই কারণেই গত কাল তৃণমূলের বিরুদ্ধে এনআরসি নিয়ে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন অমিত। কলকাতায় সভা করেও মমতার প্রতি আক্রমণ শানাতে চান তিনি। গোড়ায় ঠিক ছিল ৩ তারিখ বিজেপি যুব মোর্চার সভায় যোগ দিতে তিনি কলকাতায় যাবেন। পরে ঠিক হয় সভা হবে ১১ তারিখ।
রাজ্য বিজেপি নেতারা আজ অমিতের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেন, পুলিশ সভা করার অনুমতি দিচ্ছে না। সে কথা শুনে মুখ খোলেন অমিত। বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে সরব হন মমতাও। প্রথমে সংসদে। পরে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি রাজনৈতিক ভাবে ঘাবড়ে গিয়েছে। ২০১৯ সালে যে ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না, তা তারাও বুঝতে পারছে। আমরা সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যে কোনও দল সভা করতেই পারে।’’