কেন্দ্রশাসিত কাশ্মীরে সাংবাদিক পেটাল সেনা

বিক্ষোভের আশঙ্কায় পুরনো শ্রীনগরের কিছু এলাকায় এখনও সাধারণ নাগরিকদের গতিবিধিতে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:১৬
Share:

তল্লাশি: স্কুটার আরোহীদের জিজ্ঞাসাবাদ। শুক্রবার শ্রীনগরের প্রাণকেন্দ্রে। ছবি: পিটিআই।

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরের দিনেই কাশ্মীরে সেনার হাতে বেধড়ক মার খেলেন সাংবাদিকেরা। গুরুতর জখম হলেন এক মহিলা-সহ প্রায় এক ডজন সাংবাদিক।

Advertisement

বিক্ষোভের আশঙ্কায় পুরনো শ্রীনগরের কিছু এলাকায় এখনও সাধারণ নাগরিকদের গতিবিধিতে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। তেমনই এক এলাকায় আজ খবর সংগ্রহে গিয়েছিলেন সাংবাদিকেরা। অভিযোগ, তাঁরা যখন ছবি তুলছিলেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন, তখনই সেনাবাহিনীর একদল জওয়ান তাঁদের ঘিরে ধরে পেটাতে শুরু করে। মহিলা সাংবাদিক মসম্মত জেহার এবং আদিল আব্বাস, ইদ্রিস আব্বাস, মজিন মোট্টু-সহ অন্য সাংবাদিকেরা মারধরে জখম হন।

প্রশাসন এ নিয়ে মুখ খোলেনি। তাদের বক্তব্য, মোটের উপরে শান্তিই রয়েছে উপত্যকায়, বড় কোনও বিক্ষোভ হয়নি। আজ রাতে শোপিয়ানের কুন্দলানে পেট্রল-বোমা ছুড়ে একটি সরকারি স্কুলবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। সেখানে বোর্ডের পরীক্ষার সিট পড়েছিল। এ ছাড়া কুলগামে বিজেপি সমর্থকদের দু’টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নতুন দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের যে কোনও এলাকায় সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা ‘আফস্পা’ প্রয়োগের রাশ আজ নিজের হাতে নিয়েছে কেন্দ্র। আগে এই ক্ষমতা ছিল রাজ্য প্রশাসনের হাতে। জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা কেন্দ্রগুলির প্রস্তাবিত পুনর্বিন্যাস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকই করবে, নির্বাচন কমিশন নয়।

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শ্রীনগর ও অন্যান্য জেলা সদরে ভোর সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বাজারটা অন্তত বসছিল। আজ তা-ও বন্ধ। অন্য দোকানপাট তো বন্ধই। ইন্টারনেট বন্ধ। সরকারি বাস নেই। ট্রেন নেই। শুধু কিছু প্রাইভেট গাড়ি চলছে। তবে জেলা থেকে জেলায় যাতায়াত খুব বেশি নেই। প্রশাসন বলছে, উপত্যকার কোথাও কার্ফু নেই। তবে এক পুলিশকর্তা জানান, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পুরনো শ্রীনগরের পাঁচটি থানা এবং শৌরার কিছু কিছু এলাকায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে। দশম-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে বলে স্কুলগুলোর বাইরে যদিও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অভিভাবকদের।

৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের ঘোষণার পর থেকে আজ ছিল ৮৯তম দিন। স্থানীয়দের অভিযোগ, গোটা সময়টায় জামিয়া মসজিদে শুক্রবারের প্রার্থনাও করতে দেওয়া হয়নি কাউকে। পবিত্র মাসে এই কড়াকড়িতে ক্ষুণ্ণ তাঁরা। মুক্তি পাননি বন্দি নেতারাও। কাল উপরাজ্যপালের শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ায় পিডিপি সাংসদ নাজ়ির আহমেদ লাওয়ে-কে আজ বহিষ্কার করেছে দল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর মায়ের সাক্ষাতের ছবি টুইট করে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর কন্যা ইলতিজা লিখেছেন, ‘‘ছবিটা মন ভরানোর মতো। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তিন মাস আপনি আমার মা এবং আরও বহু নেতাকে, নাগরিক সমাজের সদস্যদের, নাবালকদের আটকে রেখেছেন। আর কত দিন মায়েদের থেকে সন্তানদের আলাদা করে রাখবেন?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement