কসাবের সেলই কি রানার ঠিকানা? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আপাতত কিছু দিন দিল্লির তিহাড় জেলই হতে চলেছে তাঁর ঠিকানা। কিন্তু ২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসের চক্রান্তে অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে বিচারের জন্য এর পর মুম্বই পুলিশের হেফাজতে পাঠাতে পারে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। মহারাষ্ট্র সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে ২৬/১১ কাণ্ডে ধৃত একমাত্র জীবিত জঙ্গি, পরে ফাঁসি হওয়া আজমল কসাবের ‘আন্ডা সেল’ই হতে চলেছে রানার ঠিকানা।
পাক পঞ্জাবের ফরিদকোটের বাসিন্দা, লশকর-ই-ত্যায়বা জঙ্গি কসাব ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর তার ১০ সঙ্গীর সঙ্গে মুম্বইয়ে হামলা চালাতে এসে ধরা পড়েছিল। ২০১২-র ২১ নভেম্বর ফাঁসির এক দিন আগে পর্যন্ত আর্থার রোড জেলের ১২ নম্বর ব্যারাকের বিস্ফোরণ প্রতিরোধী ‘আন্ডা সেল’ ছিল তার ঠিকানা। ফাঁসির আগের রাতে বোরখা পরিয়ে সড়কপথে তাকে পাঠানো হয়েছিল পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে। সেখানেই ফাঁসিতে ঝোলানো হয় কসাবকে।
মহারাষ্ট্র কারা দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, তিন একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত আর্থার রোড জেলের ১২ নম্বর ব্যারাকটি পুরোপুরি পৃথক। সেখানে নজরদারি, যাতায়াত নিয়ে কড়াকড়ি রয়েছে। বন্দিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রয়েছে আলাদা রান্নাঘর। ওই ব্যারাকে মোট তিনটি ‘সেল’ রয়েছে। তারই মধ্যে কোনও একটিতে রানাকে রাখা হতে পারে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার এনআইএ-র হাতে রানাকে তুলে দিয়েছে আমেরিকা। তাঁকে বিশেষ বিমানে দিল্লিতে নিয়ে আসা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিমান দিল্লি পৌঁছোতে পারে বলে কয়েকটি খবরে দাবি।
২৬/১১-র অন্যতম এই চক্রীকে কড়া নিরাপত্তায় দিল্লির পলাম বিমানবন্দর থেকে এনআই-এর সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হবে। তার জন্য বিমানবন্দরকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিমানবন্দর থেকে গুলিনিরোধক গাড়িতে করে এনআইএ-র সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হবে মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রীকে। দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের পাশাপাশি রানার যাত্রাপথে যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে, তার জন্য সোয়াট (স্পেশাল ওয়েপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্স) কমান্ডোও মোতায়েন করা হয়েছে। গুলিনিরোধ গাড়ি ছাড়াও ওই কনভয়ে থাকবে সাঁজোয়া গাড়ি। একটি ‘মার্কসম্যান’ সাঁজোয়া গাড়ি সর্ব ক্ষণের জন্য মোতায়েন থাকবে।
এনআইএ-র সদর দফতরেও আঁটসাঁট করা হয়েছে নিরাপত্তা। ওই চত্বরে সাধারণ মানুষের যাতায়াত আপাত ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এনআইএ-র সদর দফতরের কাছে জওহরলাল নেহরু মেট্রো স্টেশনের ২ নম্বর গেট। নিরাপত্তার স্বার্থে সেই গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, আমেরিকা থেকে ভারতে যে বিশেষ বিমানে রানাকে নিয়ে আসা হচ্ছে, সেটির যাত্রাপথে নজরদারি চালাচ্ছেন গোয়েন্দা, এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল এবং বিশেষ নিরাপত্তাবাহিনী। আমেরিকার সঙ্গে যৌথ ভাবে এই যাত্রাপথের নজরদারি চালাচ্ছেন ভারতের গোয়েন্দারা। উল্লেখ্য, গ্রেফতারের ১৬ বছর পর রানাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে আমেরিকা। সূত্রের খবর, তাঁকে নিয়ে ভারতে বিমান নামার পরই আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রেফতার করবে এনআইএ। তার পর তাঁকে ভার্চুয়ালি আদালতে পেশ করা হবে।