National News

অরুণাচলের পদচ্যুত মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

গত মাসেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অরুণাচলে মুখ্যমন্ত্রীর গদি হারানো কালিখো পুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল মঙ্গলবার। রাজধানী ইটানগরে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনেই থাকছিলেন তিনি। সেখানেই আজ সকালে কালিখো পুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ১১:১৭
Share:

কালিখো পুল

গত মাসেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অরুণাচলে প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর গদি হারিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী নিবাসেই থাকছিলেন, কারণ তাঁর বাসভবনের সংস্কারের কাজ এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিবাস ছেড়ে আর অন্যত্র উঠে যেতে হবে না কালিখো পুলকে। মঙ্গলবার সকালে অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নিবাস থেকে উদ্ধার হল কালিখো পুলের ঝুলন্ত মৃতদেহ। ডায়েরি থেকে মিলেছে সুইসাইড নোটও। কালিখো পুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল মঙ্গলবার।

Advertisement

এ দিন সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা। পুলের বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, তিনি আত্মহত্যাই করেছেন। তাঁর ডায়েরিতে সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তাতে কী লেখা রয়েছে, তা এখনও পুলিশ এখনও প্রকাশ করেনি। সুইসাইড নোটটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কালিখো পুলের মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই এ দিন ইটানগরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলের সমর্থকরা এই রহস্যজনক মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডুর বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। উপমুখ্যমন্ত্রী চৌনা মেইন এবং আরও এক মন্ত্রীর বাসভবন আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অরুণাচলে কালিখো পুলের সরকার বরখাস্ত হওয়ার পর পুলে সঙ্গে থাকা বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের ফের কংগ্রেসে ফেরানোর প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করেছিলেন এই চৌনা মেইন।

Advertisement

রাজ্যের সীমান্ত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা কালিখো পুল অরুণাচল বিধানসভায় প্রথমবার নির্বাচিত হল ১৯৯৫ সালে। সে বারই কংগ্রেসের মুকুট মিথি সরকারে অর্থ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয় তাঁকা। ২০০৩ সালে গেগং আপাং মন্ত্রিসভায় তিনি অর্থমন্ত্রীর পূর্ণ দায়িত্ব পান। তিন কংগ্রেসী মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে আট বছর অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। অরুণাচলে আর কেউ এত দীর্ঘ সময় ধরে অর্থমন্ত্রী থাকেননি। অন্য অনেক দফতরেরও দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে তাঁকে।

গত বছর, ২০১৫ সালে, কংগ্রেস এবং দলের মুখ্যমন্ত্রী নবম টুকির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন কালিখো। তাঁর নেতৃত্বে এক দল কংগ্রেস বিধায়ক টুকির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। সরকার ভেঙে দিয়ে অরুণাচলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে কেন্দ্র। তার পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিজেপির সমর্থন নিয়ে অরুণাচলের অষ্টম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন এই বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা। কিন্তু সে ক্ষমতা বেশি দিন থাকেনি। কালিখোর মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে জুলাই মাসে আবারও নবম টুকিকে গদি ফিরিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তবে টুকিও শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারেননি। কালিখো-সহ অনেক বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ক টুকিকে সমর্থন সম্ভব নয় বলে হাইকম্যান্ডকে জানিয়ে দেন। আস্থা ভোট হলে টুকির পরাজয় নিশ্চিত জেনে টুকিকে সরিয়ে পেমা খান্ডুকে দলের পরিষদীয় নেতা করা হয়। শান্ত হন কালিখো পুলরা। পেমা খান্ডুকে মুখ্যমন্ত্রী পদে মেনে নেন।

কিন্তু এর পর থেকে কালিখো পুল অবসাদ আ্রর হতাশায় ভুগতে শুরু করেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর। সেই গভীর অবসাদ থেকেই তিনি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলেই ধারণা ঘনিষ্ঠদের। তিন স্ত্রী ছাড়াও কালিখো পুল রেখে গেলেন পাঁচ ছেলেকে।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ফের হুমকি, উপত্যকা ছাড়ার ফতোয়া জারি পোস্টারে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement