ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় চার দশক পরে ঠিকানা বদলাচ্ছে বিজেপির।
দিল্লির ১১ অশোক রোড থেকে দলের সদর দফতর যাচ্ছে ৬ দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের নতুন হাইটেক অফিসে। বছর দুয়েক আগে রাখির দিনে নরেন্দ্র মোদী নিজে যজ্ঞ করে এখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। বিজেপি সূত্রের মতে, নতুন এই ভবনটি পুরোপুরি তৈরি। এখন অপেক্ষা শুধু শুভক্ষণ দেখে গৃহপ্রবেশের। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কৌশল নির্ধারণের জন্য এই নতুন ভবনটিই হতে চলেছে বিজেপির ‘ওয়ার রুম’। যেখানে মোদীর পাশাপাশি সভাপতি অমিত শাহের জন্যও থাকছে আলাদা ঘর।
সব রাজনৈতিক দলেরই সদর দফতর লুটিয়েন দিল্লি থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেটা ছিল কংগ্রেস জমানা। সেই মোতাবেক, দীনদয়াল মার্গের আশপাশে সব দলকে দফতর তৈরির জন্য জমি দেওয়া হয়। কংগ্রেসের নতুন ছ’তলা ভবন তৈরির কাজও জোরকদমে চলছে। তবে জনসঙ্ঘের নেতা দীনদয়ালের নামাঙ্কিত রাস্তার সংযোগ এড়াতে আগেই দফতরের প্রবেশপথ বদলে কোটলা রোডের দিকে করেছে কংগ্রেস। বিজেপি যদিও তাদের আগেই তড়িঘড়ি নিজেদের ভবন তৈরি করে ফেলেছে।
মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশজুড়ে নতুন-নতুন সব ভবন তৈরিতে সক্রিয় বিজেপি। রাজ্যে-রাজ্যে তৎপরতা তুঙ্গে। দিল্লিতে আরএসএসের সদর দফতরও ভেঙ্গেচুরে বদলে যাচ্ছে বহুতল ইমারতে। নোট বাতিলের পরে বিরোধীরা অভিযোগ করেন, আসলে বিভিন্ন রাজ্যে নতুন ভবন তৈরি করে কালো টাকাকে সাদা করছে বিজেপি। বিজেপি সূত্রের মতে, ১১ অশোক রোড ছেড়ে দিলেও বাংলোটি এখনই হাতছাড়া করা হবে না। অন্য কাউকে বরাদ্দ করিয়ে সেটি নিজেদের কাছেই রাখা হবে। কিন্তু ২০১৯-এর আগে নয়া ভবনটিই হবে মূল ক্ষমতাকেন্দ্র।
কী থাকছে এই ভবনে? নতুন এই হাইটেক ভবনে থাকছে মোট ৭০টি ঘর। তিনটি ব্লকের একটি সাত তলার। দু’টি বড় অডিটোরিয়ামের পাশাপাশি ৮ টি কনফারেন্স-রুমও তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে ভিডিও-কনফারেন্সে যোগাযোগ রাখা হবে আঞ্চলিক দফতরগুলির সঙ্গে। নয়া ভবনে ১০টি লিফট এবং ২০০ গাড়ি রাখার জায়গা থাকছে। পাঠাগারে ৫ হাজার বইয়ের সঙ্গে থাকছে ই-বুকও। গোটা ভবনটিকে পরিবেশ-বান্ধব করতে সৌরশক্তিও ব্যবহার করা হবে। রাতে দফতরের বাইরে হবে আলোর খেলা। সেখানে দলের নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রের প্রকল্পগুলিও মেলে ধরা হবে।
দীনদয়াল উপাধ্যায়ের সময়ে পুরনো দিল্লির অজমেরি গেটের একটি ছোট্ট বাড়ি থেকে কাজ হত। অটল বিহারী বাজপেয়ী সাংসদ হওয়ার পরে ৩০ রাজেন্দ্র প্রসাদ মার্গ থেকে চলত দলের কাজ। জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসার পরে জনসঙ্ঘের নেতা জগদীশ প্রসাদ মাথুর রাজ্যসভায় যাওয়ায় তাঁকে ১১ অশোক রোডের বাংলোটি বরাদ্দ করা হয়। তখন থেকে সেটিই বিজেপির সদর দফতর। এ বার বদলাচ্ছে ঠিকানা।