ছবি: সংগৃহীত।
করোনা রুখতে লকডাউনের হুঁশিয়ারিতেও কাজ হয়নি। এ বার আরও কড়া হলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। ঠাকরে প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত প্রেক্ষাগৃহ, অডিটোরিয়াম খোলা রাখতে হলে মোট আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ খালি রাখতে হবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য বেসরকারি অফিসগুলির ক্ষেত্রে। ওই অফিসগুলিতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কর্মী নিয়ে কাজ করা যাবে।
রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে রাশ টানতে শুক্রবার একটি নির্দেশিকা জারি করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। দর্শক সংখ্যা সীমিত করা ছাড়াও প্রেক্ষাগৃহে কোনও ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক জমায়েত করা যাবে না বলে ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। ৫০ শতাংশ আসনে দর্শকের প্রবেশাধিকার থাকলেও কঠোর ভাবে করোনাবিধি মেনে চলার নির্দেশও জারি করেছে ঠাকরে প্রশাসন। প্রেক্ষাগৃহে ঢোকার আগে প্রত্যেকের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি, মাস্কবিহীন কোনও ব্যক্তি যাতে প্রেক্ষাগৃহে ঢুকতে না পারেন, সে দিকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, ‘এই নির্দেশিকা অন্যথা করলে সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাগৃহ অতিমারি চলা পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ অতিমারির উপর থেকে জাতীয় বিপর্যয়ের তকমা সরে না যাওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। এ নিয়মের না মানলে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় জরিমানা করা হবে’।
বেসরকারি অফিসের ক্ষেত্রে কড়া হলেও জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয় বলেও জানানো হয়েছে। তবে সরকারি বা আধাসরকারি অফিসের জন্য কর্মী সংখ্যা কত হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধান। যদিও কোনও ভাবেই করোনাবিধিকে অবহেলা করা যাবে না।
রাজ্যের কলকারখানাগুলিতে অবশ্য পুরো সংখ্যার কর্মী নিয়ে খোলা রাখা যাবে। তবে কলকারখানাগুলিতে কর্মীদের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে শিফ্ট বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার।
মহারাষ্ট্রে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকেই হু হু করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের করোনা বুলেটিনে দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে আক্রান্ত মোট ২৫ হাজার ৮৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে মারা গিয়েছেন ৫৮ জন। শুধুমাত্র মুম্বইয়েই এক দিনে আক্রান্ত ৫ হাজারের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টার দেশ জুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৭২৬ জন। যার অর্ধেকের বেশি, অর্থাৎ ২৫ হাজারের বেশি রয়েছেন মহারাষ্ট্রে।