Water Intoxication

রোজ সকালে ৪ লিটার করে জল খেয়ে মৃতপ্রায় মহিলা, প্রবল খিঁচুনি, ভর্তি হাসপাতালে, কী রোগ হল?

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শরীরে জল জমেছে মহিলার। মস্তিষ্কে অক্সিজেন ঠিকমতো পৌঁছতেই পারছে না। রীতিমতো সঙ্কটজনক অবস্থা তাঁর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৪৩
Share:

বেশি জল পানের বিপদ, কী ক্ষতি হতে পারে শরীরের? প্রতীকী ছবি।

রোজ সকালে ৪ লিটার করে জল খেয়ে বিপদে হায়দরাবাদের এক মহিলা। বছর চল্লিশের ওই মহিলার প্রবল খিঁচুনি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বারে বারেই জ্ঞান হারাচ্ছেন। গত চার দিন ধরে তাঁকে ভর্তি রাখা হয়েছে আইসিইউতে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শরীরে জল জমেছে মহিলার। মস্তিষ্কে অক্সিজেন ঠিকমতো পৌঁছতেই পারছে না। রীতিমতো সঙ্কটজনক অবস্থা তাঁর।

Advertisement

কম জল খেলে যেমন শরীরে জলশূন্যতা তৈরি হবে, তেমনই বেশি জল খেলেও বিপদে পড়তে হতে পারে। শরীর তরতাজা রাখতে পর্যাপ্ত জল খাওয়ার কথাই বলেন চিকিৎসকেরা। তাই বলে সারাদিন ঢকঢক করে জল খেয়ে যাওয়া কোনও কাজের কথা নয়। ঠিক কোন সময় কতটুকু জল শরীরে দরকার তা জানা উচিত। অতিরিক্ত জল কিডনি ছেঁকে বার করতে পারবে না, ফলে কোষে কোষে সেই জল জমে শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করবে। বেশি জল খেলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। এমনকি, প্রয়োজনের অধিক জল খেলে কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিও থেকে যায়।

এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, অতিরিক্ত জল খেলে ‘ওয়াটার ইনটক্সিকেশন’ হতে পারে। হাত-পা, গোড়ালি ফুলতে শুরু করবে। পেটে জল জমতে থাকবে যা চাপ দেবে যকৃৎ ও পাকস্থলীকে। শরীরের প্রতি কোষেরই নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা থাকে। কিন্তু তার বেশি হয়ে গেলে তখন শরীরে প্রদাহ শুরু হবে।

Advertisement

চিকিৎসকের কথায়, হায়দরাবাদের মহিলার যে অবস্থা হয়েছে তাকে চিকিৎসার ভাষায় ‘হাইপোন্যাট্রেমিয়া’ বলা যেতে পারে। প্রতি ঘণ্টায় যদি কেউ দেড় লিটার বা তার বেশি জল খেয়ে ফেলে, তা হলে শরীর সোডিয়ামের মাত্রা হঠাৎ করে কমে যাবে। খনিজ উপাদানগুলি বা ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বিগড়ে যাবে। তখন খিঁচুনি, বমি, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে থাকবে। এমনকি জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতে পারেন রোগী। ওই মহিলা ঘুম থেকে উঠেই ৪ লিটার করে জল খেতেন, যেখানে সারা দিনে ৩-৪ লিটার জল খেতে বলা হয় তা-ও শরীর বুঝে। এত বেশি পরিমাণ জল পানের কারণেই সঙ্কটজনক অবস্থা তৈরি হয়েছে তাঁর।

মানুষের শরীরে ৫০-৬০ ভাগ জল থাকে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, জল, খনিজ লবণ ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকলেই শরীর সুস্থ ও তরতাজা থাকে। এই ভারসাম্য যদি নষ্ট হয়ে যায়, তখন রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। এর প্রভাব পড়বে হার্টে। তখন বুকে ব্যথা শুরু হবে, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। হৃৎস্পন্দনের হার ওঠানামা করবে। সেই সঙ্গেই প্রচণ্ড ক্লান্তিবোধ হবে, বুক ধড়ফড় করতে পারে। কেউ যদি দিনে ৬ থেকে ৭ লিটার জল পান শুরু করেন এবং কায়িক পরিশ্রমও কম হয়, তখন তা বিপদের কারণ হয়ে উঠবে। তেমন কোনও শারীরিক জটিলতা না থাকলে সারা দিনে ২ থেকে ৩ লিটার পর্যন্ত জল খাওয়া যায়। তবে, ঘণ্টায় ১ লিটারের বেশি জল না খাওয়াই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement