Walking Benefits

৩০ মিনিটেই দশ সমস্যা থেকে মুক্তি! জাদু নয়, কৌশল জানলেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব

হার্টের অসুখ থেকে হাইপার টেনশন, অ্যাসিডিটির মতো হরেক সমস্যা দূরে থাকবে সহজেই। ঘড়ি ধরে শুধু হাঁটতে হবে ৩০ মিনিট।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৫৩
Share:
দিনভর ব্যস্ততা? ঘড়ি ধরে ৩০ মিনিট হাঁটলেই ১০ সমস্যার সমাধান হতে পারে।

দিনভর ব্যস্ততা? ঘড়ি ধরে ৩০ মিনিট হাঁটলেই ১০ সমস্যার সমাধান হতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক।

কোমরে ব্যথা, পায়ে ব্যথা এখন আর শুধু বয়সকালে হয় না। টানা আট-দশ ঘণ্টা চেয়ারে বসে কাজ করার ফলে ঘাড়ে, কোমরে ব্যথা কমবয়সিদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। বদলে যাওয়া জীবন, কাজের চাপ, ব্যস্ততার প্রভাব পড়ছে শরীরে। ডায়াবিটিস, আর্থ্রাইটাইটিসের মতো রোগে কাবু হচ্ছে তরুণ প্রজন্মও। অনিয়ন্ত্রত জীবনযাপন, ভাজাভুজি খাওয়ার প্রবণতার ফলে বাড়ছে স্থূলত্বের সমস্যা।

Advertisement

চিকিৎসকেরা বলছেন, সমস্যার সমাধান লুকিয়ে দৈনন্দিন যাপনেই। স্বাস্থ্যকর খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত শরীরচর্চা এই সমস্যার সমাধান কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। খাওয়াদাওয়া না হয় নিয়ন্ত্রণ করা গেল, কিন্তু শরীরচর্চা? দিনে ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করার পর ঘুমের সময় বাদ দিলে, শরীরচর্চার জন্য আর কোন সময় পড়ে থাকে? সেই সময়ে আবার জিম!

তবে সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণা বলছে, শুধু হাঁটাহাটি করলেও ইতিবাচক ফল মিলতে পারে। হার্টের অসুখ থেকে হাইপার টেনশন, অ্যাসিডিটির মতো হরেক সমস্যা দূরে থাকবে। ঘড়ি ধরে শুধু হাঁটতে হবে ৩০ মিনিট।

Advertisement

দশ সমস্যার সমাধান!

হদ্‌যন্ত্রের অসুখ: চিকিৎসকেরা বলছেন, নিয়মিত হাঁটাহাটি রক্তচাপ বশে রাখতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি কমে অনেকটাই।

ওজন কমবে: ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা বার বার বলেন পরিমিত খেয়ে, সঠিক শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন কমানোর কথা। জিমে গিয়ে যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যায়াম না করেও ওজন কমানো যেতে পারে নিয়মিত হাঁটাহাটিতে। দিনভর অফিসের ফাঁকে আধ ঘণ্টা নিজের জন্য রাখলেই সুস্থ থাকা সম্ভব হবে।

উদ্বেগ কমে: বদলে যাওয়া জীবনযাত্রায় কাজের চাপ, উদ্বেগ জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নিয়মিত হাঁটলে ‘স্ট্রেস হরমোন’ অর্থাৎ, কর্টিজ়ল ক্ষরণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাশাপাশি, এন্ডরফিন অর্থাৎ, আনন্দের হরমোন ক্ষরণের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। যা মনমেজাজ ফুরফুরে রাখার পাশাপাশি উদ্বেগও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

শরীর চনমনে রাখে: কাজে মন বসছে না? কোনও কিছুই ভাল লাগছে না? ফুরফুরে হাওয়ায় হেঁটে আসুন। তফাত বুঝতে পারবেন নিজেই। ক্লান্তিভাব কাটিয়ে শরীর-মন তরতাজা হতে পারে খানিক হাঁটাহাটিতেই। হাঁটাচলার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। ক্লান্তিভাব উধাও হয়ে যায়।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও প্রভাব পড়ে: হাঁটাচলার ফলে শরীরে বাড়তি অক্সিজেন যায়, রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। স্নায়ু এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শরীর যথাযথ রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়। সেই কাজটি হয় হাঁটলে।

স্থূলতার ঝুঁকি কমায়: ওজন যদি বেশির দিকে থাকে তা হলে হাঁটাহাটি করা দরকার নিয়মিত। ঘড়ি ধরে ৩০ মিনিট প্রতি দিন হাঁটলেই ১ থেকে ২ মাসে ফল মিলবে। ওজন কমবে। তবে হাঁটার সঙ্গে খাওয়াও হতে হবে যথাযথ। পরিমিত। ভাজাভুজি বাদ দিতে হবে।

ফুসফুসের কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি করে: হাঁটার সঙ্গে শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন যায়। হাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার অভ্যাস ফুসফুসের জন্যেও ভাল। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় শরীরে অক্সিজেন পৌঁছয় যা মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর হয়।

ঘুম ভাল হয়: নিয়মিত হাঁটলে যেহেতু শারীরিক শ্রম হয়, তাই ঘুম ভাল হয়। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ঠিকমতো ঘুম না হলে যেমন হজমের সমস্যা হতে পারে তেমনই হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে পারে। ঘুমের সময় ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামতির কাজ সারে শরীর।

ভিটামিন ডি: হাড়ের জন্য জরুরি হল ভিটামিন ডি। এই ভিটামিনটি ত্বক সূর্যালোকের সংস্পর্শে এলে সরাসরি তৈরি করে নিতে পারে। ভোরের দিকে কেউ হাঁটাহাটি করলে শরীরে রোদ লাগবে। ইদানীং দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা, এসি ক্যাবে অফিস যাওয়া, দীর্ঘ ক্ষণ অফিসে কাজের ফলে শরীর সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসতে পারে না। যা ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার একটি কারণ।

ডায়াবিটিস : ডায়াবিটিসের রোগীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত হাঁটার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। টাইপ ২ ডায়াবিটিস বশে রাখতে হাঁটাচলা অত্যন্ত জরুরি।

৩০ মিনিট জোরে পা ফেলে টানা হাঁটলে অবশ্যই তা ওজন ঝরাতে সাহায্য করবে। তবে যদি টানা হাঁটা সম্ভব না হয়, তা হলে নিজের ছন্দে হাঁটলেও হবে। হাঁটার কারণ শুধু ওজন কমানো না হলে, যে ভাবেই হাঁটুন না কেন, সুফল কম-বেশি মিলবেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement