হর্ষদীপ
বাংলা সিনেমার গানে আবার প্রবাসিনী! মুম্বইবাসী পঞ্জাবি কন্যা হর্ষদীপ কউর।
সদ্য তিরিশ ছোঁওয়া, বছর পনেরো বলিউডে কাটিয়ে দেওয়া এই কন্যে যে সব ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন, শুনলে একটু তাক লাগে বইকী, ‘রইস’ (জালিমা), ‘যব তক হ্যায় জান’ (হীর), ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ (কবিরা), ‘রং দে বসন্তী’ (এক ওঙ্কার)!
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-প্রিয়ঙ্কা সরকার-সায়নী ঘোষ অভিনীত অর্ণব মিদ্যার ছবি ‘অন্দরকাহিনি’-তে এই হর্ষদীপই গলা দিচ্ছেন একটি বাংলা লোকগানে। ‘খেলা’, ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘নির্বাসিত’র মতো বাংলা ছবিতে সংগীতকার হিসেবে কাজ করেছেন রাজা নারায়ণ দেব। তিনিই এই ছবির গানে সুর দিয়েছেন। হর্যের গানটির কথা সুমিত সমাদ্দারের। ‘বাংলা নাচে ভাংরা’ ছবিতে একটি বাংলা-হিন্দি দ্বিভাষী গান গাওয়ার পর এ বার হর্ষদীপ পুরোপুরি বাংলাতেই গাইছেন।
দিল্লির করলবাগে জন্ম, পরিবার পঞ্জাবি হলেও শৈশবে হর্ষদীপের গান শেখার শুরু বাঙালি শিক্ষয়িত্রী শম্পা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। পরে তাঁর ধ্রুপদী গানের তালিমে গুরু হন তেজপাল সিংহ।
হর্ষদীপের গলা যেন ঈশ্বরপ্রদত্ত, আবিষ্কার করেন তাঁর গিটার-বাজিয়ে বাবা (এখন যিনি মুম্বইয়ে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবসায়ী)! মেয়ের বয়স যখন সবে পাঁচ, তখন থেকেই শুরু হয় গান শেখার জোরদার চর্চা। এর কিছু পরেই চ্যানেলে-চ্যানেলে রিয়্যালিটি শোগুলিতে গান গাওয়া, সেখানে থেকে এখন বলিউডে।
এ বছর এপ্রিলের গোড়ায় ইনদওর আইপিএল-এও পারফর্ম করলেন হর্ষদীপ। পাকিস্তানি শিল্পী সামসাদ কাদিরের সঙ্গে জুড়ি বেঁধে ‘লাভার্স কোয়েস্ট’ নামের একটি গান রেকর্ড করলেন। ‘ডিয়ার মায়া’ (সংগীত অনুপম রায়), ‘মিসেস স্কুটার’-এর মতো বেশ কয়েকটি ছবিতেও গাইছেন তিনি।
জগজিৎ সিংহর অন্ধভক্ত হর্ষদীপকে বলিউডের জার্নির কথা তুলতেই ফোনে বারবার তিনি বললেন, এ আর রহমান, প্রীতম চক্রবর্তী, বিশাল-শেখর, সেলিম- সুলেমান, শঙ্কর-এহসান-লয়দের সঙ্গে কাজ করার মুহূর্তগুলো। রহমান তাঁর গলার রেঞ্জ, স্টেজ পারফরম্যান্স নিয়ে যেমন মুগ্ধ, তেমন অনেক টিপস্ও দিয়েছেন। আর প্রীতম ওঁর টেক্সচারে খুঁজে পেয়েছেন প্রচুর ভ্যারাইটি।
কিন্তু হর্ষদীপকে হঠাৎ কেন বাংলা লোকগানে ডাকা?
রাজা বললেন, ‘‘সুফি, পঞ্জাবি লোকগানে ও দারুণ। অদ্ভুত একটা লো-পিচের গলা আছে হর্ষের, যেটা এখানকার লালনধর্মী গানে ভাল মানায়।’’
বাংলার অ-আ-ক-খ জানা নেই, তবু তিন ঘণ্টার চেষ্টায় হর্ষদীপ যে ভাবে বাংলা লোকগান গলায় ধরেছেন, তাতে মুগ্ধ ওঁরা সকলেই!