Nandigram

Bengal Polls: নন্দীগ্রামে ভাল কাজ করেছে রাজ্যের পুলিশ, দরাজ সার্টিফিকেট বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকের

কলকাতায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গেস্ট হাউসে বসে দিনভর টিভিতে ঘটনাপ্রবাহের উপরে নজর রেখেছেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিকাশ দুবে।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ, চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২১ ০৫:২১
Share:

স্থানীয় বাসিন্দাদের শান্ত করছে পুলিশ।

আমজনতার উপরে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ না-থাকলে বাংলায় পরবর্তী ছ’দফার ভোটে নন্দীগ্রামের মতো ঘটনা আবার ঘটতে পারে বলে বৃহস্পতিবার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন রাজ্যে নিযুক্ত বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। একই সঙ্গে তাঁর সার্টিফিকেট, রাজ্যের পুলিশ নন্দীগ্রামে ভাল কাজ করেছে।

Advertisement

আনন্দবাজারকে দুবে জানান, নন্দীগ্রামে যে-পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা থেকে বড় ধরনের গন্ডগোল হতে পারত। ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও লাঠি নিয়ে একসঙ্গে অনেক লোক জড়ো হয়েছিলেন। মহিলাদের এগিয়ে দেওয়া হয়েছিল সামনে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে শেষ পর্যন্ত সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে রাজ্যের পুলিশই। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনের সারিতে এ দিন তাই মহিলা জওয়ানদেরও রাখা হয়েছিল। ‘‘কিন্তু এমনটা যে ঘটতে পারে, তার আগাম খবর (ইন্টেলিজেন্স ইনপুট) ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দাদের উপরে স্থানীয় পুলিশের নিয়ন্ত্রণের অভাবও স্পষ্ট। এটা বদলাতে না-পারলে বঙ্গের প্রতিটি নির্বাচনে বারে বারে এই দৃশ্য ফিরে আসবে,’’ বলেন দুবে।

কলকাতায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গেস্ট হাউসে বসে দিনভর টিভিতে ঘটনাপ্রবাহের উপরে নজর রেখেছেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক। মাঝেমধ্যে বেজে উঠেছে মোবাইল ফোন। নন্দীগ্রাম, কেশপুর-সহ বেশ কিছু এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে। পাল্টা নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পরে দুবে বলেন, ‘‘ভোটের পরে প্রতিটি কেন্দ্রে পাঁচ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দেওয়া হচ্ছে। প্রথম দফায় যে-সব জায়গায় ভোট হয়েছে, সেখানে এখনও আছে আধাসেনা। এ বার আস্তে আস্তে তা তুলে নেওয়া হবে। তবে এ দিন নন্দীগ্রামের যে-ছবি দেখলাম, যে-ভাবে মহিলারা এগিয়ে আসছেন, তাতে কাল (শুক্রবার) থেকে পাঁচ কোম্পানি বাহিনীর মধ্যে অবশ্যই এক কোম্পানি মহিলা বাহিনী রাখতে বলে দিয়েছি।’’

Advertisement

কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তো কার্যত দেখাই যাচ্ছে না! দুবের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিজে থেকে কোনও ধরনের পদক্ষেপ করতে পারবে না। তাকে পরিচালনা করবে রাজ্যের পুলিশই। কোথায় গন্ডগোল হচ্ছে, সেই জায়গাটা থানা থেকে কতটা দূরে রয়েছে, তা স্থানীয় পুলিশই জানবে, বাহিনী নয়। বাহিনীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে তারা কাজ করতে পারবে। ‘‘নন্দীগ্রামের বয়ালে যে-ভাবে দু’পক্ষ দু’দিকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, তাতে স্রেফ বুঝিয়ে কথা বলে তাদের সরিয়ে দেওয়া সহজ কাজ নয়। রাজ্যের পুলিশ এখানে ভাল কাজ করেছে। স্থানীয় মানুষেরও প্রশংসা করতে হবে। উত্তেজিত হয়ে নিজেদের মধ্যে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেনি,’’ বললেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক।

অভিযোগ উঠেছে, বহিরাগতেরা ঢুকে নন্দীগ্রামে গন্ডগোল পাকিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী সেটা দেখেও দেখেনি। দুবের বক্তব্য, সেটাও রাজ্য পুলিশেরই দেখার কথা। কে বাইরের লোক আর কে এখানকার, সেটা রাজ্য পুলিশের ভাল করে জানার কথা। তা ছাড়া, কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে এখন কোনও পক্ষেরই অভিযোগ থাকার কথা নয়। ‘‘দিনহাটার ঘটনায় বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আমরাই তো জানিয়ে দিয়েছি, সেখানকার বিজেপি কর্মী খুন হননি, ওটা আত্মহত্যা,’’ বলেন দুবে।

নন্দীগ্রামে এ দিন উত্তেজনা বাড়ার খবর পেয়ে দিল্লি থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতরে ফোন করেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত, দেশের উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement