পুরুলিয়ার বলরামপুরের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
পায়ে প্লাস্টার। ঘুরছেন হুইলচেয়ারে। এত দিন মঞ্চময় পায়চারি করতে করতে বক্তব্য রাখতে অভ্যস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার কী ভাবে ভাষণ দেবেন, তা দেখার কৌতূহল নিয়েই সোমবার পুরুলিয়ার ঝালদা ও বলরামপুরে ভিড় করলেন অনেকে।
নন্দীগ্রামে মমতার আঘাত পাওয়ার পরে, রাজ্যে এ দিনই প্রথম তাঁর নির্বাচনী জনসভা ছিল পুরুলিয়া জেলায়। তৃণমূল নেত্রীর প্রথম সভা ঝালদার হাইস্কুল মাঠে চড়া রোদে নাতনিকে কোলে নিয়ে ঢুকছিলেন ঝালদা ১ ব্লকের ইচাহাতু গ্রামের প্রৌঢ় গোপাল কালিন্দী। বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে চোট পাওয়ায় চিন্তায় ছিলাম। উনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন কি না, দেখতে এসেছি।” দুর্গাপুরে হোটেলে ফেরার পথে মমতা সুহানা পরভিন নামে এক বালিকার গাল টিপে আদর করেন। সুহানা বলে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কেমন আছেন, জানতে চেয়েছিলাম।’’
মমতা ঝালদা শহরে এলেন বহু বছর পরে। ঝালদা ১ ব্লকের গোকুলনগরের ভারতী নায়ক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে সামনাসামনি আগে দেখিনি। পায়ে চোট নিয়েও তিনি সভা করতে আসছেন শুনে এসেছি।’’ বলরামপুরের সভায় ডুমারি গ্রামের সর্বেশ্বর মাহাতো, নদুডি গ্রামের মার্ক্স টুডুরাও বলেন, ‘‘ভাঙা পা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সভা করতে আসছেন, আর আমরা আসতে পারব না?’’
সভার গোড়ায় মমতা বলেন, ‘‘১০ মার্চ একটি ঘটনায় আমার পায়ে, সারা শরীরে চোট লাগে। সৌভাগ্যবশত সে দিন বেঁচে গিয়েছি। পায়ে প্লাস্টার থাকায় হাঁটাচলা করতে পারছি না। সামনে নির্বাচন। কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিল, ভাঙা পা নিয়ে আমি বেরোতেই পারব না। কিন্তু আমি মনে করি, শরীরে যন্ত্রণা থাকলেও সাধারণ মানুষের যন্ত্রণা অনেক বেশি। তাঁদের ভাল থাকতে হবে, বাংলায় শান্তি রক্ষা করতে হবে।’’ সভা শেষে তিনি বলেন, ‘‘পা ভাল হয়ে গেলে, আবার আসব। ভোটটা আমাকে দেবেন তো? আমি দাঁড়াতে পারলাম না বলে ক্ষমা চাইছি।’’
বলরামপুরের প্রার্থী তথা পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘পায়ে চোট নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী আসছেন জেনে সাধারণ মানুষও উদ্দীপ্ত হয়ে সভায় এসেছেন।’’ তবে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘জঙ্গলমহলের মানুষের জীবন-যন্ত্রণাকে সহানুভূতির মোড়কে মুড়ে ফেলা যাবে না। তাঁরা ভোট দেবেন বিজেপিকেই।’’