চন্দননগরে তৃণমূল প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেনের প্রচারে ধামসা-মাদল নিয়ে আদিবাসীরা। রবিবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি।
রবিবার ছুটির দিনে প্রচারের ঝড় উঠল জেলাজুড়ে। কেউ জোর দিলেন বাজার এলাকায় জনসংযোগে, কেউ করলেন মহামিছিল। কারও মিছিলে শোনা গেল ধামসা-মাদলের সুর। কারও মিছিলের অনুষঙ্গ ছিল ব্যান্ডপার্টি।
রবিবারের সকালে চন্দননগরের আকাশ ছিল মেঘলা। হালকা ঠান্ডা হাওয়ায় কুণ্ডুঘাটে গঙ্গার পাড় থেকে প্রচার শুরু করেন তৃণমূলের তারকা-প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন। মানুষের নজর কাড়তে শুধু স্লোগান নয়, মিছিলের সামনে ছিল রণপা, জোকার। আর ছিলেন সাদা ধুতি-গেঞ্জি পরা গোটা পঞ্চাশেক ঢাকি এবং ধামসা মাদলের তালে নৃত্যরতা আদিবাসী মহিলারা। প্রতিপক্ষের গায়ক-প্রার্থীর মতো চমক ছিল না সিপিএম প্রার্থী গৌতম সরকারের প্রচারে। তাঁকে নিয়ে চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বর স্টেশন-লাগোয়া এলাকায় মিছিল করলেন কংগ্রেস এবং সিপিএমের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক।
চাঁপদানির বিজেপী প্রার্থী রাজকুমারী কেশরী সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরলেন। চুঁচুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অসিত মজুমদারের প্রচারে ছিল ব্যান্ডপার্টি। ওই কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী প্রণব ঘোষও দিনভর প্রচারে ঘুরলেন শহরের বিভিন্ন জায়গায়। সপ্তগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী তপন দাশগুপ্ত সকাল সকাল পুজো সেরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। সপ্তগ্রাম, বাঁশবেড়িয়া থেকে মগরা, গজঘন্টা—সব জায়গাতেই জনসংযোগে কেটে গেল গোটা দিন। প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের দিলীপ নাথও পিছিয়ে ছিলেন না।
বিকেলে তারকেশ্বরের বালিগোড়ীতে দলীয় প্রার্থী রচপাল সিংহের সমর্থনে পথসভা করেন স্থানীয় সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। মঞ্চে এক সময় ছড়াও কাটতে শোনা গেল সাংসদকে, ‘‘বন্যেরা বনে সুন্দর / শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। বিরোধীরা টিভিতে সুন্দর / মমতা বাংলার ঘরে ঘরে।’’
জাঙ্গিপাড়ার সিপিএম প্রার্থী পবিত্র সিংহরায় রাজবলহাটে মিছিল করেন। হরিপালে তৃণমূলের বেচারাম মান্নার প্রতিপক্ষ সিপিএম প্রার্থী যোগিয়ানন্দ মিশ্রের সমর্থনে বিশাল মিছিল বের হয়। কংগ্রেস-সিপিএম দুই দলের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক মিছিলে সামিল হন।
প্রার্থিপদ নিয়ে বিতর্ক সরিয়ে রেখে এত দিন কর্মিসভা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন সিঙ্গুরের তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। রবিবার বিকেলে মিছিলের মধ্য দিয়ে দলুইগাছা থেকে প্রচার শুরু করলেন সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাই’। রবীন্দ্রনাথবাবুর প্রতিপক্ষ সিপিএমের রবীন দেব অবশ্য সকাল থেকেই সিঙ্গুর বাজার চষে ফেলেন। রবিবার সকালে বাজারে প্রচুর ভিড় হয়। থলে হাতে বাজারে আসা গেরস্থের হাতে সময়ও থাকে অনেক। সেই সুযোগটাকেই সুদে-আসলে নিতে চেয়েছেন দলের পোড়খাওয়া নেতা রবীনবাবু।
বলাগড়ের তৃণমূল প্রার্থী অসীম মাঝি রবিবার প্রচার সারেন একতারপুর এলাকায়। শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ্ত রায় সকালে রিষড়ার সুভাষনগর এবং বাঙ্গুর পার্ক এলাকায় বাড়ি বাড়ি প্রচার করেন। সন্ধ্যায় কর্মিসভা করেন। সুদীপ্তবাবুর দাবি, এ দিন সিপিএম ছেড়ে বেশ কিছু কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য ওই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস প্রার্থী শুভঙ্কর সরকার শ্রীরামপুর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে হেঁটেই জনসংযোগ সারলেন। পথচলতি মানুষের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই জমে গেলেন আড্ডায়। বিকেলে পান্ডুয়ায় কংগ্রেস ও সিপিএমের যৌথ মিছিল হয়। সিপিএম প্রার্থী আমজাদ হোসেনের সমর্থনে পান্ডুয়া মেলাতলা থেকে কলবাজার পর্যন্ত মিছিল হয়। সামিল হন রাজ্য সিপিএম নেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, হুগলি সিপিএমের সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী। তৃণমূল প্রার্থী রহিম নবী পাঁচগড়া-তোরগ্রাম এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘোরেন। বিজেপি প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য মিছিল করার পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি ঘুরলেন।