খামার নাওবাঁধ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্র। মোট ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। সকাল ৯টার মধ্যেই সেখানে ২২৩টা ভোট পড়ে যায়। সেই সময় অভিযোগ ওঠে প্রিসাইডিং অফিসারের প্ররোচনাতেই সেখানে নাকি অবাধে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছেন তৃণমূলকর্মীরা। অভিযোগ পাওয়ার পরে সেখানে উপস্থিত হন শাসন বিধানসভার হাড়োয়ায় জোটপ্রার্থী ইমতিয়াজ হোসেন। বুথের বাইরে তখন চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছেন বেশ কয়েক জন মহিলা ভোটার। তাঁরা বলতে থাকেন, ‘‘আমরা এসে দেখি আমাদের ভোট পড়ে গেছে।’’ আব্দুল কালাম এবং কুতুবুদ্দিন গোলদার নামে দুই তৃণমূল কর্মীকে দেখিয়ে আমনা বিবি নামে এক ভোটার বলেন, ‘‘আমাদের ভোট এই দু’জন দিয়ে দিয়েছে।’’ একই অভিযোগ আফসানা খাতুন-সহ অন্যদেরও। ভোটারদের বিক্ষোভে ঘণ্টা দেড়েক বন্ধ থাকে ভোটগ্রহণ। যদিও সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন প্রিসাইডিং অফিসার হাসিবুর রহমান। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে তিনি বলেন, ওই বুথে নাকি কোনও ছাপ্পাভোটই পড়েনি। ভুলবশত ‘দু’-একটি’ ঘটনা ঘটেছে।
এর পর জোটপ্রার্থী ফোন করেন সেক্টর অফিসারকে। খবর যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে। তাঁরা খবর পাঠান উর্ধতন অফিসারকে। তত ক্ষণে বুথ ঘিরে ফেলেন তৃণমূল সমর্থকেরা। শুরু হয় হুমকি, শাসানি। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশ। হাজির হন সেক্টর অফিসার অশোক দত্ত। তিনি আব্দুল কালামকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। জোটপ্রার্থী ইমতিয়াজ আলি প্রিসাইডিং অফিসারদের বদলির দাবি তোলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেনা জওয়ানেরা এর পর তাঁকে ধাক্কা মেরে বুথ থেকে বার করে দেন।
গতকাল রাত থেকে বহিরা, ভাগ্যবন্ডপুরের মত এলাকায়, রাতে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে । শুধু খামার নয়, আজ সকাল থেকেই ভাদপুর, শান্ডালিয়া সহ শাসনের বহু এলাকায় ছাপ্পাভোট, জোটের এজেন্টদের ভয় দেখানোর খবর শোনা যাচ্ছিল। যেখানে যেখানে শাসকের হুমকির খবর পাওয়া গেছে সেখানেই ছুটে গেছেন জোটপ্রার্থী ইমতিয়াজ হোসেন। অন্য দিকে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল প্রার্থী নুরুল ইসলাম। পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেছেন ‘‘বিভিন্ন জায়গায় জোট প্রার্থীরা ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে, তবে মোটের উপর ভোট শান্তিতেই হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন-তিন বছরের মেয়েকে ফেলে মার, ব্যাপক হুমকি, তবু ভোট দিলেন মা