বিদ্যুৎ বন্ধ হতে চলেছে গাজায়, আবার হামলা আশ্রয় শিবিরে

পরিস্রুত পানীয় জল নেই। ভেঙে পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। দ্রুত ফুরিয়ে আসছে রসদ। একই সঙ্গে এ বার গাজায় বিদ্যুৎও বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা। কারণ, ইজরায়েলি হামলায় গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটির এমনই ক্ষতি হয়েছে যে তা সারাতে এক বছর লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষ। এই হামলায় প্রায় তিন লক্ষ গ্যালন জ্বালানিও পুড়ে গিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ১৯:১০
Share:

আশ্রয় শিবিরে ইজরায়েলি হামলায় আহত শিশু। ছবি: এএফপি

পরিস্রুত পানীয় জল নেই। ভেঙে পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। দ্রুত ফুরিয়ে আসছে রসদ। একই সঙ্গে এ বার গাজায় বিদ্যুৎও বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা। কারণ, ইজরায়েলি হামলায় গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটির এমনই ক্ষতি হয়েছে যে তা সারাতে এক বছর লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষ। এই হামলায় প্রায় তিন লক্ষ গ্যালন জ্বালানিও পুড়ে গিয়েছে।

Advertisement

প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হলে পূর্ব গাজায় বিদুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার বাসিন্দারা দিনে মাত্র চার ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ পেতেন। এর পরে তা-ও মিলবে না বলে আশঙ্কা। বিদুৎ বন্ধ হবে হাসপাতাল এবং জল পরিশোধনাগারে। ভরসা বলতে থাকবে জেনারেটর। কিন্তু জ্বালানির আকাশছোঁয়া দামে তা-ও বেশি ক্ষণ চালানো সম্ভব নয়। পরিস্রুত পানীয় জলের অভাবে নানা ধরনের জলবাহিত রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে প্যালেস্তাইন স্বাস্থ্য দফতর। এই চাপের মধ্যে ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর পাশাপাশি বিদ্যুতের সমস্যা হলে চিকিৎসা ব্যবস্থাও গভীর সঙ্কটের মধ্যে পড়বে। যদিও গাজার অল্প অংশে ইজরায়েল থেকে বিদ্যুৎ আসে।

এ দিকে, গাজায় সংঘর্ষ বিরতির কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের আরও একটি আশ্রয় শিবিরে হামলা হয়েছে। এ বার ঘটনাস্থল জাবালিয়া। বুধবার সকালে এই আশ্রয় শিবিরের ভিতরে আবু হুসেন স্কুলে ইজরায়েলি ট্যাঙ্কের গোলা আছড়ে পড়ে। গোলার আঘাতে স্কুলটির ছাদ ও দেওয়াল উড়ে যায়। প্রাণ হারান ২০ জন। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১২৬ জন। ঘটনাটির তদন্ত করা হচ্ছে বলে ইজরায়েলি প্রশাসন জানিয়েছে। এই অঞ্চলে ইজরায়েলি হামলায় আরও ২৩ জনের প্রাণ গিয়েছে। ২৩ দিন ধরে চলা সংঘর্ষে গাজায় প্রায় ১২৪২ জনের প্রাণ গিয়েছে। এর মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সাধারণ নাগরিক। আহত হয়েছেন সাত হাজার বাসিন্দাও। এই হামলায় ঘরছাড়া হয়েছেন ২ লক্ষের বেশি। অধিকাংশ ঘরছাড়াই রাষ্ট্রপুঞ্জের আশ্রয় শিবিরগুলিতে রয়েছেন। ঘরছাড়াদের ভিড়ে আশ্রয় শিবিরগুলি ভরে উঠেছে। পরিকাঠামোয় প্রবল চাপ পড়ছে।

Advertisement

অন্য দিকে, এ দিন হামাসের টিভিতে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে হামাস জঙ্গিরা একটি সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে ইজরায়েলি ওয়াচটাওয়ারে হামলা করছে। এটিই মঙ্গলবারের নাহাল ওজের আক্রমণের ভিডিও বলে হামাসের দাবি। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পরে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আবার সুড়ঙ্গগুলি ধ্বংস না-করা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি স্কুল থেকে বেশ কিছু রকেট পাওয়া গিয়েছে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে। স্কুলটির নাম না জানালেও এই ঘটনায় রাষ্ট্রপুঞ্জ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই ঘটনার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ কাউকে দায়ী না করলেও হামাস কী ভাবে সাধারণ বাসিন্দাদের ‘হিউম্যান শিল্ড’ হিসেবে ব্যবহার করছে এটি তারই একটি উদাহরণ বলে ইজরায়েলের দাবি।

পাশাপাশি চলছে যুদ্ধবিরতির আলোচনাও। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের প্যালেস্তাইন কর্তৃপক্ষ হামাসকে যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেন। হামাস এই অনুরোধ মানেনি। এমনকী, এ ধরনের প্রস্তাব এসেছে বলে হামাস স্বীকার করেনি। ইজরায়েলি সূত্রে খবর, মিশর যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব তৈরি করছে। এর আগে দু’বার মিশরের দেওয়া প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখান করে। পাশাপাশি, ইজরায়েলি হামলার প্রতিবাদে চিলি এবং পেরু ইজরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement