গাজার হাসপাতালে চিকিত্সাধীন প্যালেস্তিনীয় শিশু। বিমান হানায় মৃত্যু হয়েছে তার মা ও তাঁর আরও দুই সন্তানের। ছবি: রয়টার্স।
এ বার গাজার উত্তরে বেইট লাহিয়া অঞ্চলে হামলার হুমকি দিল ইজরায়েল। রবিবার হেলিকপ্টার থেকে এই অঞ্চলে লিফলেট ছড়িয়ে ইজরায়েলি সেনা এ কথা জানিয়েছে। লিফলেট-এ বাসিন্দাদের নিরাপদ অঞ্চলে চলে যাওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। ইজরায়েলের অভিযোগ, এই অঞ্চল থেকে হামাস বার বার রকেট হামলা চালাচ্ছে। গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭২-এ।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের ত্রাণ দফতর সূত্রে খবর, বেইট লাহিয়ায় প্রায় ৭০ হাজার প্যালেস্তিনীয়ের বাস। ইজরায়েল লিফলেট ছড়ানোর পরে আক্রমণের আশঙ্কায় প্রায় এক-চতুর্থাংশ বাসিন্দা ইতিমধ্যে ঘর ছেড়েছেন। কিন্তু এই অবস্থায়ও হামলা হলে বহু মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে।
এরই পাশাপাশি, হামাসের পাঠানো দ্রোন ধ্বংস করছে বলে সোমবার ইজরায়েল দাবি করেছে। আশদোদ বন্দরের কাছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র দ্রোনটিকে ধ্বংস করে। দ্রোনটি কোনও বিস্ফোরক বহন করছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ইজরায়েলি প্রশাসন সূত্রে খবর। অন্য দিকে, ইজরায়েলের উপর আরও দ্রোন হামলার হুমকি দিয়েছে হামাস। এ দিন ইজরায়েল, হামাসের প্রশিক্ষণ শিবিরের উপরে হামলা চালায়। হামাসের একটি রকেট ইজরায়েলের একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে পড়ে। ফলে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই কেন্দ্রটি থেকে গাজার প্রায় ৭০ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎ পেতেন। লেবানন থেকেও রকেট হামলা হয়। জবাবে ইজরায়েলি ট্যাঙ্ক গোলাবর্ষণ করে। সব মিলিয়ে গাজায় এ পর্যন্ত ১৩২০টি লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করা হয়েছে বলে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানেয়াহু জানিয়েছেন। ইজরায়েল লক্ষ করে হামাসও প্রায় ৮০০টি রকেট ছুঁড়েছে বলে তিনি জানান।
দক্ষিণ গাজা ভূখণ্ডের রাফায় ইজরায়েলি বিমান হানা। এএফপির-র তোলা ছবি।
রাষ্ট্রসঙ্ঘ সূত্রে খবর, প্রায় ১৭০০০ প্যালেস্তিনীয় তাদের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন। স্থান সঙ্কুলানের জন্য আশ্রয় শিবিরগুলির আয়তন বাড়ানো হচ্ছে। গাজায় নিহতদের মধ্যে ৭৭ শতাংশই সাধারণ নাগরিক বলে রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে বলে প্যালেস্তিনীয় প্রশাসন সূত্রে খবর। সাধারণ প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করলেও প্রধানমন্ত্রী নেতানেয়াহু এর দায় হামাসের উপরেই চাপিয়েছেন। কিন্তু হামাসের অন্যতম নেতা ইজ্জাক আল রসিক জানিয়েছেন, নেতানেয়াহুই এই যুদ্ধ শুরু করেছেন। অতএব, তাঁকেই এই যুদ্ধ শেষ করতে হবে। পাশাপাশি, যুদ্ধবিরতি হলে তাঁদের শর্ত মানতে হবে বলেও তাঁর দাবি। রাষ্ট্রসঙ্ঘ আবার অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আবেদন করেছে। জার্মান বিদেশমন্ত্রী ফ্র্যাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার এ দিন ইজরায়েলে এসেছেন। তিনি প্যালেস্তিনীয়দের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে।