‘অপহৃত’ সেনার সন্ধানে ইজরায়েলের জোরদার অভিযান

ঠিক কখন ইজরায়েলি সেনা অফিসারকে অপহরণ বা হত্যা করা হয়েছে? এই প্রশ্নের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ইজরায়েল ও হামাস কে যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে তার উত্তর। স্বভাবতই দ্বিমত দু’পক্ষ। অব্যাহত রক্তপাতও। শনিবার গাজায় মৃতের তালিকায় জুড়ল আরও ৫০টি নাম।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ১৮:৪৩
Share:

এটুকুই সম্বল! গাজা। ছবি: এএফপি।

ঠিক কখন ইজরায়েলি সেনা অফিসারকে অপহরণ বা হত্যা করা হয়েছে? এই প্রশ্নের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ইজরায়েল ও হামাস কে যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে তার উত্তর। স্বভাবতই দ্বিমত দু’পক্ষ। অব্যাহত রক্তপাতও। শনিবার গাজায় মৃতের তালিকায় জুড়ল আরও ৫০টি নাম।

Advertisement

শুক্রবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে গাজায় ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো শুরুও হয়েছিল। কিন্তু ২ ঘণ্টা যেতে না যেতেই তাল কাটল। ইজরায়েলের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতির শর্তমাফিক তাদের সেনা গাজায় হামাসের সুড়ঙ্গের সন্ধান করছিল। রাফায় সেনাদের একটি দল এমনই একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান পান। সুড়ঙ্গে অভিযান চালানোর আগেই হামাসের এক জঙ্গি আত্মঘাতী আক্রমণ চালায়। এতে দুই সেনার মৃত্যু হয়। ইজরায়েলের দাবি, এই দলের অন্য সদস্য লেফ্টেন্যান্ট হাদার গোল্ডইনকে হামাসের জঙ্গিরা অপহরণ করে।

হামাসের পক্ষ থেকে আক্রমণের কথা স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু তারা জানায়, হামলাটি যুদ্ধবিরতির আগেই হয়েছিল। তা ছাড়া হাদার গোল্ডইনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে হামাস এখনও স্বীকার করেনি। কারণ, হামলায় অংশ নেওয়া জঙ্গিদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পারেনি। সম্ভবত ইজরায়েলের জবাবি হামলায় লেফ্টেন্যান্ট হাদার গোল্ডইন-সহ আক্রমণকারী জঙ্গিদের মৃত্যু হয়েছে বলে হামাস মনে করছে। গোল্ডইনকে অপহরণের অজুহাতে ইজরায়েলি হামলায় শুক্রবার রাফায় ১৫০ জনের প্রাণ যায়।

Advertisement

ধ্বংসের চোখে চোখ। ছবি: এএফপি।

ইজরায়েল জানিয়েছে, অপহৃত সেনার খোঁজে গাজার ঘরে ঘরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। প্রথমে যুদ্ধবিরতি ভাঙার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছে তারা। ইজরায়েলের আশঙ্কা, গোল্ডইনকে বন্দি বিনিময়ের জন্য ব্যবহার করা হবে। ২০০৬-এ আর এক ইজরায়েলি সেনা গিলাদ শালিতকে অপহরণ করে হামাস। পাঁচ বছর পরে এক হাজার প্যালেস্তিনীয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে তাঁকে মুক্তি দেয় হামাস। বিনা শর্তে বন্দি সেনাকে মুক্ত করার জন্য আবেদন করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি। তিনি এ বিষয়ে হামাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য কাতার ও তুরস্কের কাছে অনুরোধ করেছেন।

আমেরিকা, রাষ্ট্রপুঞ্জ ছাড়াও তুরস্ক, কাতার, মিশর শুক্রবারের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের জন্য আলোচনায় অংশ নিয়েছিল। এই সম্মিলিত চেষ্টার পরেও যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু হামলা থামেনি। গাজায় মৃতের সংখ্যা শনিবার ১৬৫০-এ পৌঁছল। আহত ৮৯০০ জন। প্রাণ গিয়েছে ৬৩ জন ইজরায়েলির। প্রতিবাদ চলছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও। সেখানে দুই প্রতিবাদীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

হামাসের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্তানুসারে তারা ইজরায়েলের শহর ও গাজার বাইরে থাকা ইজরায়েলি সেনার উপরে আক্রমণ থেকে বিরত থাকবে বলে জানিয়েছিল। কিন্ত গাজার ভিতরে অভিযানে নামা ইজরায়েলি সেনার সঙ্গে জঙ্গিরা মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ অনিবার্য। ইজরায়েল সেনার ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যাচ্ছে, শুক্র ও শনিবার ২০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি মসজিদে চলা হামাসের প্রশিক্ষণ শিবির ও অস্ত্রাগারে হামলা চলে। হামলা হয়েছে গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়েও। জবাবে হামাস এখনও পর্যন্ত ৩০৩৪টি রকেট ছুড়েছে। এর মধ্যে ইজরায়েলের হাইফা ও তেল আভিভ লক্ষ করে দূরপাল্লার রকেট ছোড়া হয়েছে বলে হামাস দাবি করেছে। তবে এতে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এ দিকে মার্কিন কংগ্রেস ইজরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্রধ্বংসী ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’কে সক্রিয় রাখতে ২ কোটি ২৫ লক্ষ ডলার অনুমোদন করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement