নিজেদের মুদ্রা ইউয়ানের দাম কমিয়ে ভারতের উদ্বেগ ক্রমাগত বাড়াচ্ছে পড়শি মুলুক চিন। শুক্রবার সরাসরি তা স্বীকার করলেন শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, এতে চিনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়তে পারে। কঠিন হবে রফতানিকে চাঙ্গা করা। তবে সব ঝড়ঝাপ্টা সামলে এ দিন অন্তত অল্প হলেও উত্থানের মুখ দেখেছে ভারতের শেয়ার বাজার। বেড়েছে টাকার দরও।
ইউয়ান ধাঁধা
চিনের শেয়ার বাজার গত কয়েক দিন ধরেই টালমাটাল। অর্থনীতির অবস্থাও নড়বড়ে। চিনের অর্থনীতি আজ বহু দিনই রফতানি নির্ভর। তাই ঘুরে দাঁড়াতে আগে তাকে চাঙ্গা করতে চায় তারা। আর সম্ভবত সেই লক্ষ্যেই বৃহস্পতিবার নিজেদের মুদ্রা ইউয়ানের দাম কমিয়েছে (অবমূল্যায়ন) চিন। এই নিয়ে মোট তিন বার। গত পাঁচ মাসের মধ্যে সব থেকে বেশি।
মন্ত্রীর আশঙ্কা
চিনের এই পদক্ষেপে প্রমাদ গুনেছে দিল্লি। কারণ, এর ফলে চিন থেকে যে সব পণ্য ভারতে আসে, তা আরও সস্তা হবে। ফলে আমদানি বাড়বে। অথচ ভারত থেকে চিনে যাওয়া পণ্যের দর বাড়ায় কমবে রফতানি। সীতারামনের আশঙ্কা, এর জেরে আরও চওড়া হবে বাণিজ্য ঘাটতি। শুধু তা-ই নয়। এমনিতেই দামের লড়াইয়ে চিনের সঙ্গে যুঝে ওঠা শক্ত। ইউয়ানের দর কমার পরে তা আরও কঠিন হবে। ফলে অন্যান্য দেশেও রফতানির যুদ্ধে চিনের সঙ্গে এঁটে ওঠা মুশকিল। অবস্থা সামলানোর রাস্তা খুঁজতে মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন এবং নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগড়িয়ার সঙ্গে সম্ভবত শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন তিনি।
থামল পতন
এই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে শুক্রবার ভারতের শেয়ার বাজার অবশ্য মন্দের ভাল। চলতি সপ্তাহের প্রথম চার দিনে ১,৩০০ পয়েন্টেরও বেশি খোয়ানোর পরে এ দিন অন্তত উত্থানের মুখ দেখেছে সেনসেক্স। ৮২.৫০ পয়েন্ট বেড়ে পৌঁছেছে ২৪,৯৩৪.৩৩ অঙ্কে। তবে একে বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত বলে মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বরং গন্ধ পাচ্ছেন বাজেট পর্যন্ত শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা বহাল থাকার।
ওঠার কারণ
চিনা বাজারের নিয়ম, সূচক ৭ শতাংশের বেশি পড়লেই, ‘সার্কিট ব্রেকার’ পদ্ধতিতে লেনদেন বন্ধ করা হয়। কিন্তু তাতে অযথা আশঙ্কা বাড়ছে লগ্নিকারীদের। আপাতত তাই তা তুলে দিল চিনের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক। এ দিন তার সুফল মিলেছে হাতেনাতে। কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ায় সে দেশের বাজার। পরে নামলেও প্রথমে তা কিছুটা বেড়েও গিয়েছিল। এর সদর্থক প্রভাব পড়েছে বিশ্ব বাজারে। ভারতও বাদ যায়নি। সেনসেক্সের উত্থানে বারুদ জুগিয়েছে পড়তি বাজারে কম দামে ভাল শেয়ার কেনার হিড়িকও।
বাড়ল টাকাও
এ দিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দরও এক লাফে বেড়েছে ৩০ পয়সা। ডলারের দাম হয়েছে ৬৬.৬৩ টাকা।