—ফাইল চিত্র
অবশেষে এল সংশোধন। ৪৯ হাজার পেরিয়ে সেনসেক্স যখন ৫০ হাজারে, তখনই লাভ তোলার তাগিদে বিক্রির পথে নামলেন লগ্নিকারীরা। যাঁরা শেয়ারে বিনিয়োগের অপেক্ষায় পুঁজি হাতে নিয়ে তৈরি ছিলেন, তাঁরা হাঁফ ছাড়লেন কিছুটা। কারণ, নাগাড়ে দৌড়তে থাকা বাজারে ওই সংশোধনের সময়টাতেই খোলে লগ্নির সুযোগ। চড়া বাজারে ফান্ডে লগ্নিকারীরাও বিক্রির পথে নেমে লাভ তুলছেন ঘরে। তবে এসআইপি মারফত অনেকে লগ্নি বাড়াচ্ছেন। যে পথে অল্প করে নিয়মিত পুঁজি ঢেলে বড় তহবিল গড়া যায়, আবার ঝুঁকিকেও বাগে রাখা সম্ভব হয়। ডিসেম্বরে এসআইপি বাবদ মোট উঠেছে ৭৮৩১ কোটি টাকা। যা মার্চের পরে সব থেকে বেশি।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে ৫০ হাজারমুখী সেনসেক্সের কোনও যোগ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ। সেই কারণেও গত শুক্রবারের পতন অল্প হলেও কিছুটা নিশ্চিন্ত করেছে লগ্নিকারীদের। স্বস্তি দিয়েছে খুচরো এবং পাইকারি, দুই বাজারেই ডিসেম্বরে মূল্যবৃদ্ধির হারের কিছুটা নিম্নমুখী হওয়া। খুচরো মূল্যবৃদ্ধি কমে হয়েছে ৪.৫৯% (১৪ মাসে সব থেকে কম), পাইকারি ১.২২%। মূলত আনাজের দাম কমাই যার কারণ।
শুক্রবার পড়েছে সারা বিশ্বের বাজার। সর্বত্রই যা অর্থনীতির বাস্তব অবস্থাকে তোয়াক্কা না-করে ছুটছে। বিভিন্ন দেশে প্রতিষেধক প্রয়োগ শুরু হলেও, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বাজার যেন মাত্রাতিরিক্ত আশাবাদী। অথচ করোনার দাপট অব্যাহত। ঝুঁকির নিরিখে তাই এমন পতন কাম্য। এতে আর্থিক পরিস্থিতির সঙ্গে সূচকের সামঞ্জস্য বাড়ে। লগ্নিকারীরা সুযোগ পান তুলনায় কম দামে শেয়ার কেনার।
বাজারে টাকার জোগান বেশি বাড়ায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক তার কিছুটা শুষে নেওয়ার পদক্ষেপ করবে বলে জানিয়েছে। ফলে বাড়ছে বন্ড ইল্ড। অর্থাৎ কমছে আগে ইসু করা বন্ডের দাম। শুক্রবার ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের ইল্ড বেড়ে হয়েছে ৫.৯৮%। ইল্ড বাড়লে বন্ড লগ্নিতে (ট্রেজারি) ব্যাঙ্কগুলির লাভ কমতে পারে। কমতে পারে বন্ড ফান্ডের ন্যাভ-ও। আর একটি খারাপ খবর, নভেম্বরে ফের সঙ্কুচিত শিল্পোৎপাদন, ১.৯%। মূলত কল-কারখানা এবং খনন শিল্পে উৎপাদন যথাক্রমে ১.৭% এবং ৭.৩% কমায়। অর্থনীতির ভিত যে নড়বড়েই, এটা তার ইঙ্গিত। অতিমারির জেরে বিভিন্ন সংস্থা ঋণ শোধ করতে সমস্যায় পড়ায় ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ বেড়ে মোট ঋণের ১৪.৮% ছুঁতে পারে বলেও আশঙ্কা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের।
তবে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ইনফোসিস, উইপ্রো এবং এইচসিএল টেকনোলজির নিট লাভ বেড়েছে যথাক্রমে ১৭%, ২১% এবং ৩১%। এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের নিট মুনাফাও ১৮% বেড়ে হয়েছে ৮৭৫৮ কোটি টাকা।
(মতামত ব্যক্তিগত)