ফাইল চিত্র।
এ রাজ্যেও দ্রুত গতিতে ফের ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। অন্যান্য রাজ্যের মতোই তার দাপট বেশি কলকাতা-সহ সমস্ত শহরাঞ্চলে। ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে শয্যার অভাবের অভিযোগ উঠছে। প্রথম দফার মতো সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ যুঝতেও তাই রাজ্য প্রশাসনকে হাসপাতাল সংলগ্ন হোটেলের ঘরকে চিকিৎসার কাজে লাগানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন হোটেল অ্যান্ড রেস্টোর্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া-র (এইচআরএইআই) কর্তারা। মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠকেই। সরকারি সূত্রের খবর, বুধবার কলকাতা পুরসভায় এইচআরএইআই-এর সঙ্গে রাজ্য এবং পুরসভার শীর্ষ স্তরের আমলাদের বৈঠকে ইচ্ছুক হোটেলগুলিকে বিভিন্ন হাসপাতালের ‘স্যাটেলাইট’ বা সংযুক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ফলে আর্থিক সঙ্কটে বিপর্যস্ত হোটেলগুলিও কিছুটা বিকল্প ব্যবসার সূত্র পাবে।
করোনা রুখতে গত বছর লকডাউনের সময় থেকেই হোটেল ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়ে। সেই সময়ে হাসপাতালেও শয্যার অভাব দেখা দিয়েছিল। অনেকে বাড়ির স্বল্প পরিসরে নিভৃতবাসে থাকার জায়গা পাচ্ছিলেন না। তখনও হোটেলের ঘরকে দু’ভাবেই কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এক, হাসপাতালের স্যাটেলাইট চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার
করা। দুই, ঘর ভাড়া নিয়ে নিভৃতবাসে (সেফ হোম প্রকল্প) থাকার প্রয়োজনীয়তা মেটানো। দু’ক্ষেত্রেই অনুমোদন দেয় রাজ্য প্রশাসন।
এ দিন বৈঠকের পরে এইচআরএইআই-এর প্রেসিডেন্ট সুদেশ পোদ্দার জানান, আপাতত কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য তাঁদের সদস্য হোটেলগুলি ৫০০টি ঘর চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ দিনই কয়েকটি হাসপাতাল এবং হোটেলের মধ্যে প্রায় ১০০টি ঘরের চুক্তিও হয়েছে। হাসপাতালের শয্যা না-থাকলে সেই হোটেলে আক্রান্তকে রেখে তাঁর চিকিৎসা চলবে। আশা, বাকি ঘরগুলি নিয়েও তিন-চার দিনের মধ্যে চুক্তি হয়ে যাবে। জেলা শহরেও এই ব্যবস্থা চালুর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিলিগুড়ি, মালদহ, আসানসোলের মতো বিভিন্ন জায়গায় এইচআরএইআই-এর সদস্য হোটেলগুলির সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হবে, জানান সুদেশ।
এই ব্যবস্থাকে অবশ্য শুধু ব্যবসার সূত্র হিসেবে দেখতে নারাজ তাঁরা। সুদেশের দাবি, কঠিন সময় সামাজিক দায়িত্ব পালন করাই মূল উদ্দেশ্য। হোটেলের ঘরের ভাড়াও এ ক্ষেত্রে অনেকটাই কম ধরা হবে। হাসপাতালের চিকিৎসা-সহ ঘরের সেই খরচ যদিও রোগীকেই বইতে হবে। তবে সেই আয় হোটেল পরিচালনার ন্যূনতম খরচ জোগাতে যে কাজে লাগবে, তা মানছেন তিনি। কারণ ফের সংক্রমণ বাড়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই ব্যবসায় ফের টান পড়েছে। ঘরগুলিকে এ ভাবে বিকল্প কাজে লাগাতে পারলে বিদ্যুৎ বিল, কর্মীদের বেতনের মতো কিছু খরচের অন্তত একাংশ উঠবে।