শিল্পপতি গৌতম আদানি। ফাইল ছবি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও শিল্পপতি গৌতম আদানির সম্পর্ক নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন তোলার জন্যই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। প্রশ্ন তুলেছিলেন, গৌতম আদানির সংস্থায় ২০,০০০ কোটি টাকার বেনামি অর্থ কার? এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের আর্থিক লেনদেনের বিস্তারিত হিসাব প্রকাশ করল আদানি গোষ্ঠী। জানাল, তারা বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার বেচে টাকা তুলেছে এবং ব্যবসা বাড়াতে পুনর্বিনিয়োগ করেছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, হিন্ডেনবার্গ আদানিদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলার পর থেকে কার্যত কোণঠাসা তারা। শেয়ার দর পড়েছে। মোদী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলে বিঁধছে বিরোধী দল। এই পরিস্থিতিতে গোষ্ঠী ব্যবসায়িক হিসাব দিল এই প্রথম। হিন্ডেনবার্গ বলেছিল, তারা বিদেশে ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে কর ফাঁকি দিয়ে তহবিল সরিয়েছে। তা এ দেশে তাদের সংস্থাগুলিতে ঢোকায় চটজলদি বিপুল বাড়ে শেয়ার দর। রাহুল গান্ধীরও অভিযোগ, ভুয়ো সংস্থা মারফতই আদানি গোষ্ঠীতে ২০,০০০ কোটি টাকা ঢুকেছে। বিবৃতিতে আদানিদের দাবি, ২০১৯ থেকে তারা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার অংশীদারি বিক্রি করে ২৮৭ কোটি ডলার (প্রায় ২৩,৫৩১.১৩ কোটি টাকা) তোলে। এর ২৫৫ কোটি ডলারই (প্রায় ২০,৯০৭.৪৫ কোটি টাকা) তাদের ব্যবসা বাড়াতে ফেরলগ্নি হয়েছে।
গোষ্ঠীর ব্যাখ্যা, ২০২১-এর জানুয়ারিতে অপ্রচলিত বিদ্যুৎ সংস্থা এজিইএল-এর ২০% ফ্রান্সের টোটালএনার্জিস-কে বিক্রি করে ২০০ কোটি ডলার তুলেছিল। তার আগে আদানি টোটাল গ্যাসের ৩৭.৫% অংশীদারিও তাদের কাছে বেচা হয় ৭৮.৩০ কোটি ডলারে। তাদের কথায়, ‘‘টোটালএনার্জিস বিদেশে আদানি টোটাল গ্যাসে প্রোমোটারদের অংশীদারি কিনে লগ্নি করেছে। তার হাত ধরে বিদেশ থেকে ভারতে গোষ্ঠীর সংস্থাগুলিতে তহবিল ঢুকেছে, যাকে এখন ‘ভুয়ো সংস্থার’ লগ্নি তকমা দিচ্ছেন কেউ কেউ।’’
আদানিদের বক্তব্য, সংগৃহীত অর্থ গোষ্ঠীর প্রোমোটারেরা আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস, আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জোন, আদানি ট্রান্সমিশন এবং আদানি পাওয়ার-সহ নানা সংস্থায় পুনর্বিনিয়োগ করেছেন। তাদের দাবি, ‘‘আমরা বুঝি যে, আদানিদের টেনে নামানোর প্রতিযোগিতা অনেককে আকৃষ্ট করছে। কিন্তু সব শেয়ার বাজারের আইন মেনে করেছি। প্রোমোটারদের মালিকানা ও লগ্নির ক্ষেত্রে লুকোছাপা নেই। সব তথ্য স্বচ্ছ, সহজ লভ্য। নিয়ম মেনে তথ্য সময় মতো জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিভ্রান্তিমূলক প্রচার দুঃখজনক রাজনৈতিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’