বৃহস্পতিবার কলকাতায় নির্মলা সীতারামন। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
আগামী সোমবার পঞ্চম দফার ভোট। তার আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতায় দাঁড়িয়ে শিল্পায়নের প্রশ্নে পূর্বতন বাম এবং বর্তমান তৃণমূল সরকারকে একাধারে ব্যর্থতার অভিযোগে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। দাবি করলেন, এক সময় বাংলা শিল্পের নিরিখে দেশের প্রথম সারির রাজ্যগুলির অন্যতম হিসেবে গণ্য হলেও গত ৫০ বছরে পরিস্থিতির লাগাতার অবনতি হয়েছে। যদিও শাসকদলকে একটু বেশি দুষে নির্মলা বলেন, শিল্পের হাল এখন বামফ্রন্ট জমানার থেকেও অনেক বেশি খারাপ হয়েছে। বড় শিল্প তো আসেই না। বরং যারা ছিল তাদের অনেকে রাজ্য ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, তোলাবাজি এবং গুন্ডাগিরির অভিযোগ তুলে তাঁর মন্তব্য, এই সব কারণেই বড় সংস্থা থাকছে না। শিল্প তৈরির অনুকূল পরিবেশই নেই।
তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘নির্মলা সীতারামন যে পরিবেশে থাকেন, সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি বোঝা সম্ভব নয়। এখানে গত ১০ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিকল্প অর্থনৈতিক ভাবনা প্রতিষ্ঠা করেছেন। শুধু শিল্প লগ্নি হয়নি, তার বিকেন্দ্রীকরণ হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বহু মানুষ যুক্ত হয়েছেন এবং সরকারের ইতিবাচক মনোভাবে তা বৃহত্তর অংশের কাছে গ্রহণযোগ্য পেয়েছে।’’ কুণালের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিকে মূল্যায়ন করতে করোনার সময় লকডাউন চলাকালীন দেশের বিভিন্ন রাজ্যের আর্থিক অবস্থার সঙ্গে এ রাজ্যের তুলনা করলেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তা বুঝতে পারতেন।
এ দিন বিশেষ সম্পর্ক অভিযান নামের এক সংগঠনের আয়োজিত নাগরিক সম্মেলনে যোগ দিতে কলকাতায় আসেন নির্মলা। সেখানেই আর্থিক, সামাজিক-সহ নানা দিক থেকে কী হারে রাজ্যের অবনতি হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেন তিনি। বলেন, ১৯৪৭-এ দেশের মোট উৎপাদন শিল্পের ২৪-২৫ শতাংশের অংশীদার ছিল পশ্চিমবঙ্গ। এখন নেমেছে ৩ শতাংশে। কমেছে মানুষের মাথাপিছু আয়। যে কারণে শহরাঞ্চলে মাথাপিছু খরচের নিরিখে বাংলা নেমেছে অষ্টমে, গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে ছ’য়ে। মাসিক মাথাপিছু খরচে পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে পিছিয়ে গিয়েছে ৮ নম্বরে।
মূলধন তৈরির নিরিখেও রাজ্য পিছিয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন নির্মলা। তাঁর দাবি, এখানে এক সময়ে মূলধন সৃষ্টির হার ছিল ৬.৭%। এখন তা ২.৬%। রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির এটি অন্যতম কারণ বলে অভিযোগ তাঁর। বড় কারখানা স্থাপন প্রসঙ্গে মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ চিপ তৈরির কারখানা টানতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ অসম সরকার তা পেরেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy