জাতীয় নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।
প্রথম দফায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘প্রভাবশালী’-দের ‘নজরে’ রাখার কৌশল কার্যকর হয়েছে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকের। সংশ্লিষ্ট মহলের অনুমান, আগামী দফাগুলিতেও ওই একই কৌশল কার্যকর করতে চলেছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কর্তারা।
প্রথম দফায় তিনটি লোকসভা আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর ছিল কোচবিহার কেন্দ্রেই। সংবেদনশীল বা অতি সংবেদনশীল বুথের নিরিখে ওই কেন্দ্রই এগিয়ে ছিল। নিরাপত্তা বন্দোবস্তও তাই সেখানেই তুলনায় বেশি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন। তবু আশঙ্কা ছিল কর্তাদের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, এই আবহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক এবং রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর উপর বাড়তি নজর রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কারণ, ভোটের আগে ওই দুই ‘প্রভাবশালী’ নেতার বাগযুদ্ধে পরিস্থিতি উত্তপ্তও হয়েছিল বার বার। তাই ভোট শুরুর সময় থেকেই ওই দুই নেতার গাড়ির সঙ্গে কমিশনের আধিকারিকদের একটি করে গাড়ি জুড়ে দেওয়া হয়। তাতে ছিলেন একজন ভিডিয়োগ্রাফারও। গোটা দিন দুই নেতা যেখানে গিয়েছেন, কমিশনের ক্যামেরা তাঁদের লেন্সবন্দি করে রেখেছিল। কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘‘জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে এই ক্ষমতা রয়েছে।’’
আগামিকাল, শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোট হবে দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাটে। সেই দফা থেকে পরবর্তী প্রতিটি দফায় এমন পথই কমিশন অনুসরণ করতে পারে অনুমান অভিজ্ঞ জেলা এবং প্রশাসনিক কর্তাদের। ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় দফার ভোটে রায়গঞ্জ কেন্দ্রের মধ্যেই থাকা ইসলামপুরের উপর বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জ যত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হবে, প্রায় সম সংখ্যক বাহিনী পাঠানো হচ্ছে ইসলামপুরেও। ওই দফার ভোটেও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে ঘুরেই ভোট-নজরদারি করার কথা বিশেষ পুলিশ এবং বিশেষ সাধারণ পর্যবেক্ষকের।
গত বিধানসভা ভোটে কোচবিহারের শীতলখুচির যে কেন্দ্রে গুলি চলেছিল, সেই কেন্দ্রে সিআইএসএফ-কে নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখেনি কমিশন। কোচবিহার জেলা প্রশাসনের উপরেও বাড়তি চাপ ছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে। দ্বিতীয় পদক্ষেপে ওই জেলায় চিহ্নিত থাকা অন্তত ৫০জন দুষ্কৃতীকে ভোটের দিন সকালেই হেফাজতে নিয়ে নেয় পুলিশ। ফলে ভোটে বড়সড় গোলমাল পাকানোর সুযোগ কারও ছিল না। প্রসঙ্গত, ওই ভোটে কোচবিহারে থেকেই গোটা ভোট প্রক্রিয়ার উপর নজর রেখেছিলেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক।
কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য, “জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে জেলা প্রশাসনের উপর ব্যাপক চাপ দিয়েছিল কমিশন। ভোটে গোলমাল পাকাতে পারে, এমন অভিযুক্তদেরও ছেড়ে রাখা হয়নি। ফলে দ্বিমুখী কৌশল কার্যকর করা গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy