এই তোরণ নিয়েই জমছে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
দলের মধ্যে হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে ‘বিতর্ক’ যেন পিছু ছাড়ছে না!
এ বার তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ের গেটে লাগানো ব্যানারে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী তথা দলের ‘মুখ’ নরেন্দ্র মোদীর ছবি না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন দলীয় কর্মীদের অনেকে। ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
চুঁচুড়ার বিবেকানন্দ রোডের পাশে, ৩ নম্বর গেটে রয়েছে বিজেপির জেলা কার্যালয়। সেটিকেই হুগলি কেন্দ্রের জন্য দলের নির্বাচনী কার্যালয় করা হয়েছে। সেখানকার গেটেই লাগানো হয়েছে বড় ব্যানার। ব্যানারে রয়েছে দলের প্রতীক এবং দু’পাশে লকেটের করজোড়ে লম্বা ছবি। দু'টি ছবির নীচেই লকেটকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।
বিজেপির জেলা কমিটির বর্ষীয়ান সদস্য স্বপন দেবনাথের ক্ষোভ, ‘‘১৯৮২ সাল থেকে দল করছি। সে সময় হুগলিতে বিজেপির নামগন্ধ ছিল না। তখন থেকেই জানি, বিজেপিতে 'আমি’ নয়, 'আমরা’ই সব। কিন্তু এখন দেখছি এখানে ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি হচ্ছে! এটা চলতে পারে না।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চন্দননগরের এক দলীয় কর্মী বলেন, "মাঝেমধ্যেই চুঁচুড়ার ওই কার্যালয়ে যাই। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকেও গিয়েছিলাম। কিন্তু গেটে লাগানো ওই ব্যানার দেখে মাথা গরম হয়ে যায়। আর ভিতরে ঢুকিনি।’’ মঙ্গলবার ওই কার্যালয়ের ভিতরের ফাঁকা অংশে মঞ্চ বেঁধে দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলা মহিলা মোর্চার কর্মী সম্মেলন হয়। সেখানে যোগ দেওয়া মহিলা কর্মীরাও এ নিয়ে সমালোচনা শুরু করেন। চুঁচুড়ার এক মহিলা বিজেপি কর্মীর কথায়, ‘‘ওই ব্যানারে শুধু লকেটদির ছবি থাকা উচিত হয়নি। কারণ, মোদীজি ছাড়া আমরা এখন বিজেপিকে ভাবতেই পারি না।’’
বিজেপির একটি সূত্রের খবর, গত সোমবার লাগানো হয় ওই ব্যানার। সে দিন থেকেই অফিসে আসা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের শুরু। বিজেপির রাজ্য নেতা স্বপন পালও বলেন, ‘‘মোদীজিই আমাদের সব। উনিই দলের মুখ।’’ একইসঙ্গে তাঁর সাফাই "গেটের সামনে মোদীজির বড় ছবি ছিল। ঝড়-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে। দু'এক দিনের মধ্যেই নরেন্দ্র মোদীর বড় কাট-আউট বসানো হবে।’’ লকেট শুধু বলেন, "ভোটের জন্য দলীয় কার্যালয় সাজানো চলছে, কাজ শেষ হয়নি। মোদীজির ছবি থাকবেই।’’
বিষয়টি নিয়ে সে ভাবে মন্তব্য করতে না চাইলেও এর পিছনে বিজেপির দলীয় কোন্দলকেই দায়ী করছেন তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন। তিনি বলেন, "এটা বিজেপির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। যা নিয়ে তৃণমূল আগ্রহী নয়। ওই দল (বিজেপি) গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। তাই হয়তো মোদীর ছবি উধাও!" গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানেনি গেরুয়া শিবির।
লকেটকে নিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ নতুন নয়। ভোট ঘোষণার আগে থেকেই সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করা শুরু করেন অনেক বিজেপি কর্মী। নাম ঘোষণার আগে লকেট ছাড়া অন্য তিনজনের নামে দেওয়াল লিখনও হয়ে যায়। লকেটকে এই কেন্দ্রে না চেয়ে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও পড়ে। কিন্তু দল লকেটের উপরেই ভরসা রেখেছে। তারপরেও লকেটের প্রতি দলের একাংশের ‘বিরুদ্ধাচরণ’ বন্ধ হয়নি। যদিও সব ক'টি ঘটনাই তৃণমূলের কারসাজি বলে দাবি করেছিলেন লকেট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy