ইস্তফা দিলেন স্যাম পিত্রোদা। ছবি পিটিআই।
গাত্রবর্ণ সংক্রান্ত মন্তব্যের জেরে ‘ঘরে-বাইরে’ প্রবল বিতর্কের মুখে কংগ্রেসের বৈদেশিক (ওভারসিজ়) শাখার চেয়ারম্যানর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন স্যাম পিত্রোদা। এআইসিসির মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বুধবার রাতে জানিয়েছেন, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেকে ফোন করে পদ ছাড়ার কথা জানিয়েছেন স্যাম।
স্যাম মঙ্গলবার একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় বহুত্ববাদী ঐতিহ্যের মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেন, ‘‘দক্ষিণ ভারতের মানুষের সঙ্গে আফ্রিকার জনগোষ্ঠীর মিল রয়েছে। পশ্চিম ভারতীয়দের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে আরবীয়দের। পূর্ব ভারতের মানুষের চেহারার ধাঁচ কিছুটা চিনাদের মতো। কিন্তু এমন প্রভেদ সত্ত্বেও গত ৭৫ বছর ধরে আমরা সুন্দর পরিবেশে মিলেমিশে রয়েছি। তেমন কোনও জাতিগত সংঘাত সৃষ্টি হয়নি।’’
ওই মন্তব্যের পর থেকেই স্যামকে নিশানা করেছে বিজেপি। পাশাপাশি গান্ধী-নেহরু পরিবারের ঘনিষ্ঠ স্যামের প্রসঙ্গ টেনে বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ টেনে নিশানা করা হয় কংগ্রেসকেও। তেলঙ্গানার ওয়ারঙ্গলে বিজেপির ভোটপ্রচারে গিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের শাহজাদার পরামর্শদাতা গাত্রবর্ণ তুলে ভারতবাসীকে আক্রমণ করেছেন। আমি ক্রুদ্ধ। আমাকে আপনারা অনেক কটু কথা বলেছেন। আমি কিছু মনে করিনি। কিন্তু আমার দেশের মানুষকে আক্রমণ করলে সহ্য করব না।’’ এর পরেই প্রধানমন্ত্রীর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘গায়ের রং যা-ই হোক না কেন, আমরা সকলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করি।’’
লোকসভা ভোটপর্বের মাঝে বিতর্কের মুখে কংগ্রেসও আমেরিকা নিবাসী স্যামের মন্তব্যের দায় ঝেড়ে ফেলে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম বলেন, ‘‘ভারতের জাতিগত বৈচিত্রের কথা বোঝাতে গিয়ে স্যাম পিত্রোদা যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কংগ্রেস তাঁর ওই মন্তব্য থেকে দূরত্ব রাখছে।’’ তার পরেই দলের বৈদেশিক শাখার দায়িত্ব ছাড়তে চাইলেন রাজীব গান্ধীর জমানায় ভারতের টেলিকম বিপ্লবের স্থপতি।
অতীতে ভারতীয় সংবিধান রচনায় জওহরলাল নেহরুর ভূমিকা এবং ১৯৮৪-র শিখবিরোধী দাঙ্গা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ রয়েছে স্যামের বিরুদ্ধে। গত জানুয়ারিতে মোদী অযোধ্যার রামমন্দির উদ্বোধনের আগে স্যাম বলেছিলেন, ‘‘ধর্মকে বড্ড বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এখন। গণতন্ত্র পিছনে চলে যাচ্ছে। এই যে সবাই ভাবছে দেশের যা কিছু ভাল সব প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব, এই ব্যাপারটা চিন্তার। বেশ ইঙ্গিত পাচ্ছি যে, আমরা ভুল রাস্তায় এগোচ্ছি। গোটা জাতি যখন রামমন্দির, রাম জন্মভূমি, দিয়া জ্বালাও বলে মেতে ওঠে, তখন সেটা বোঝা যায়।’’ তাঁর ওই মন্তব্যকে অস্ত্র করে সে সময় কংগ্রেসকে বিঁধেছিল বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy