Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গো-ধন লুটে চোর পালাল

সকাল থেকে শোকে মূহ্যমান গো-হারা আশ্রম। রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতী দল হামলা চালালেও টাকাপয়সা, সোনাদানা কিচ্ছুটি ছোঁয়নি। ধারাল অস্ত্র দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছে শুধু পাঁচটি গাই গরু! বুধবার সোদপুরের এক আশ্রমের ঘটনা।

অঙ্কন: অশোক মল্লিক

অঙ্কন: অশোক মল্লিক

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:২১
Share: Save:

সকাল থেকে শোকে মূহ্যমান গো-হারা আশ্রম। রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতী দল হামলা চালালেও টাকাপয়সা, সোনাদানা কিচ্ছুটি ছোঁয়নি। ধারাল অস্ত্র দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছে শুধু পাঁচটি গাই গরু!

বুধবার সোদপুরের এক আশ্রমের ঘটনা। খবর পেয়েই বৃহস্পতিবার কোমর বেঁধে গো-অন্বেষণে নেমেছে খড়দহ থানার পুলিশ। শেষমেশ রাতে কয়েক জনকে ‘গরু চোর’ সন্দেহে পাকড়াও করে লোপাট গরুর খোঁজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।

সূত্রের খবর, সোদপুরের সুখচর এলাকায় গঙ্গার ধারেই কয়েক বিঘা জমির উপর ‘কাঠিয়া বাবা’ আশ্রম। আশ্রমের মন্দিরের পিছনে গোশালায় থাকে ৪৫টি গরু।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘ দিন ধরেই গোশালার গরুদের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন সত্তরোর্ধ্ব প্রভু যাদব। গোশালার একটি ঘুপচি ঘরে থাকেন তিনি। বুধবার রাতেও তিনি সেখানেই ঘুমিয়ে ছিলেন। অভিযোগ, রাত আড়াইটে নাগাদ গোশালায় ঢোকার ছোট গেটের তালা দুষ্কৃতীরা ভেঙে ফেললেও ‘হাম্বা’ ডাকের চোটে প্রথমে তা টের পাননি প্রভু। তিনি বলেন, ‘‘আচমকা চোখ খুলে দেখি ষন্ডা মতো দুটো লোক আমার দু’হাত চেপে রেখেছে। আরও কয়েক জন ধারাল অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’ প্রভু জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁকে হুমকি দেয় গরু বাছাই করে নিয়ে যাওয়া হবে তাই চেঁচামেচি করলেই প্রাণে মেরে দেওয়া হবে। এ দিকে এক সঙ্গে এত অপরিচিত লোক দেখে চিৎকার জুড়ে দেয় গুরুগুলিও।

প্রভু পুলিশকে জানিয়েছেন, বেশ কিছুক্ষণ জরিপ করার পরেই ছ’টি গরুর গলায় বাঁধা দড়ি কেটে বাইরে নিয়ে যায় ডাকাতেরা। তবে কোনও মতে ডাকাতদের কবল থেকে পালিয়ে গোশালায় ফিরে আসে একটি গরু। ডাকাতরা চলে যেতেই চেঁচামেচি জুড়ে দেন প্রভু। আশ্রমের লোকজন ও প্রতিবেশীরা গোশালায় চলে আসেন। স্থানীয়েরা জানান, প্রায় প্রতি রাতেই গরুর ডাক শোনা যায়। তাই ওই রাতে ‘হাম্বা হাম্বা’ ডাকেও বিপদ হয়েছে বলে বুঝতে পারেননি। আশ্রমের এক কর্ণধার বঙ্কুবিহারী মোহন্ত বলেন, ‘‘গরু নিয়ে কে পালাল, বুঝতে
পারছি না।’’

তদন্তে পুলিশের অনুমান, ঘন জনবসতি এলাকার মধ্যে গোশালার একটু দূরেই ম্যাটাডর দাঁড় করিয়ে রেখেছিল ডাকাতেরা। পাঁচটি গরুকে তাতে চাপিয়েই চম্পট দিয়েছে ডাকাতেরা। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার নীরজ সিংহ বলেন, ‘‘একটা দল আছে যারা হুগলি, কামারহাটি, খড়দহ, টিটাগড় এই সমস্ত এলাকায় গরু চুরি করে। অনেক দিন আগে নৈহাটিতে ধারাল অস্ত্র-সহ একটা গরু চুরির দল ধরা পড়েছিল। রাতে কয়েক জনকে ধরা হয়েছে।’’

তবে রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও পুলিশের গরু খোঁজা শেষ হয়নি। পাঁচটি গরু এখনও নিরুদ্দেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khardaha cows stolen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE