গীতা সেন মাধ্যমিকে ৫৫০ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে। নিজস্ব চিত্র।
চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়েই মারা যান বাবার। রিকশাচালক বাবা হরেন সেন ক্যানসারে মারা যান। মা শুক্লা সেন পরিচারিকার কাজ করেন। পারিবারিক আর্থিক দুরবস্থার কারণে মাঝ থেই পড়াশোনা ছাড়তে হয়েছে দাদা ও ভাইকে। কঠিন দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে জলপাইগুড়ি তিস্তা পারের গীতা সেন মাধ্যমিকে ৫৫০ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে।
পঞ্চম শ্রেণি থেকেই গীতা জলপাইগুড়ি কদমতলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। স্কুলের শিক্ষিকাদের সহযোগিতা সব সময়ই গীতা পেয়েছে বলে জানিয়েছে। ডাক্তার অথবা ফার্মাসিস্ট হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও আর্থিক দুরবস্থার কারণে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবে কি না, তা নিয়েই এখন সব চেয়ে বেশি চিন্তিত গীতা।
বাঁশ ও টিনের বেড়া দেওয়া ছোট ঘরের মধ্যেই এক মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার। মা জানান, সরকারি সুযোগ আজও কিছুই মেলেনি। অভাবের সংসারে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া চালানো খুবই কঠিন। গীতার দাদা বীরেন মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে কাগজের থালা ও গ্লাস তৈরির কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। ছোট ভাই তাপসও লেখাপড়া ছেড়ে কাজে নামতে বাধ্য হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
গীতা বাংলায় ৭৬, ইংরেজিতে ৬৩, অঙ্কে ৮৩, ভৌত বিজ্ঞানে ৭৩, জীবন বিজ্ঞানে ৮৪, ইতিহাসে ৭৪ এবং ভূগোলে ৯৭ পেয়েছে। ছাত্রীটি বলে, ‘‘মেডিক্যালে পড়ার ইচ্ছে ছোট থেকেই। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে গেলে, অনেক বেশি খরচ। আমার মায়ের পক্ষে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনার খরচ দেওয়া তো সম্ভব হবে না। জানি না কী হবে!’’
কদমতলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রীতা রায় সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের গর্ব গীতা সেন। আমরা সব সময়ই দুঃস্থ ও মেধাবী ছাত্রীদের পড়াশোনায় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy