—প্রতীকী চিত্র।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে হুগলি আসনে বিপুল গেরুয়া ঝড়ের মধ্যেও চন্দননগরে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। তারপরে আরও দু’টি নির্বাচন দেখেছে এই বিধানসভা। ২০২১-এর বিধানসভা ভোট এবং তার পরের বছর পুরভোট (এই বিধানসভা এলাকায় কোনও পঞ্চায়েত নেই— দুই নির্বাচনেই ঘাসফুলই জিতেছিল। ফিকে হয় গেরুয়া।
ফলে, পরিসংখ্যান তুলে ধরে এ বারও তৃণমূল শিবিরের দাবি, শুধু এই বিধানসভাতেই নয়, হুগলি লোকসভা আসনেও তারাই জয়ী হবে। প্রচারে তারা রাজ্য সরকারের ‘উন্নয়ন’, বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি সরব হয়েছে কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’ নিয়েও। মেয়র রাম চক্রবর্তীর দাবি, এ বার এই বিধানসভায় তাঁরা ৩০-৩৫ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবেন। একই দাবি আরও অনেক নেতার। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল এগিয়ে ছিল তিন হাজারের কিছু বেশি ভোটে। বিধানসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে সেই ব্যবধানই ৩০ হাজার পেরিয়ে যায়।
রাজনৈতিক মহলের অনেকে মনে করছেন, চন্দননগরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সাম্প্রতিক সময়ে সে ভাবে প্রকট হয়নি। ফলে, অনেকটাই ঘর গুছিয়ে নিতে পেরেছে তারা। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মাস দেড়েক আগেই বুথস্তরে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। ভাল সাড়াও মিলছে। দলীয় পুর-সদস্য (কাউন্সিলর) শুভজিৎ সাউ জানান, বুথ সভাপতি, ওয়ার্ড সভাপতির সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে প্রথম দফায় বাড়ি বাড়ি প্রচারও শেষ হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই দ্বিতীয় দফায় বুথ স্লিপ বিলি শুরু হবে।
তৃণমূল যতই ওই পরিসংখ্যানের কথা বলুক, সাম্প্রতিক কোনও নির্বাচনের ফলাফলকেই পাত্তা দিতে নারাজ বিজেপি। এমনকি, পুরভোটে বেশির ভাগ বিজেপি প্রার্থীর জামানত জব্দ হলেও বিষয়টি দলের অন্দরে আর গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিজেপির হুগলি নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান সুবীর নাগের দাবি, ‘‘পরিসংখ্যানের কোনও মূল্য নেই। এ বার অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই। আমরাই জিতব।’’
কিসের ভিত্তিতে বিজেপির এই প্রত্যয়?
বিজেপি নেতৃত্বের অনেকেই দাবি করছেন, তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’ই এ বার ভোটে প্রধান বিষয়। রাজ্যের অন্য জায়গার মতো এখানেও তার প্রভাব পড়বে। সুবীরের দাবি, ‘‘গত কয়েক বছরে চন্দননগরের অনেক তৃণমূল নেতাই বিজেপিতে এসেছেন। অনেকে তৃণমূলে থেকেও বিজেপির হয়ে কাজ করছেন।’’ সুবীর তৃণমূলে অন্তর্ঘাতের ইঙ্গিত দিলেও তা উড়িয়ে দিয়েছেন শুভজিৎরা।
মূল লড়াই বিজেপি-তৃণমূলের হলেও বামেরাও এ বার ফল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। গত বিধানসভা নির্বাচনে লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় ভোট বাড়িয়েছিল বামেরা। পুরভোটে চন্দননগরের কিন্তু দু’টি ওয়ার্ডে বিপুল জয় পেয়েছিলেন বামপ্রার্থীরা। যা তৃণমূলের নিরঙ্কুশ বোর্ড দখলের স্বপ্ন অধরা করে দিয়েছিল। এ বার বামেদের সঙ্গে কংগ্রেস একজোট হয়েছে। ফলে, এ বার অঙ্ক অনেক পাল্টে যাবে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘পুরভোটে জনমতের পরিবর্তন আমরা দেখেছি। তাই এ বার চন্দননগর বিধানসভার ফল নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy